অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ধাপসমুহ
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমান অনলাইন মার্কেটিং বাজারে প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।কারণ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে তেমন পুজির প্রয়োজন হয় না এবং মার্কেটের পণ্য নিয়ে এফিলেটদের কোন ঝামেলায় পড়তে হয় না। যেখানে আপনি বিভিন্ন ব্র্যান্ড কোম্পানির কাছে থেকে অ্যাফিলিয়েট লিংক নিয়ে
তাদের পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে মাস শেষে ভালো কমিশন পেতে পারেন। বর্তমানে মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আর ব্যস্ততার কারণে অনলাইনে শপিংয়ে চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে সাথে সাথে এফিলেটদের সংখ্যাও বাড়ছে।আপনি চাইলে আপনার ধৈর্য ও ইচ্ছা শক্তির দ্বারা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করে ভবিষ্যতে সফল হতে পারবে।
পোস্ট সুচিপত্র ঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় ধাপসমূহ
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ আয় করার সেরা উপায়
- জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম মাধ্যম
- বর্তমানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর চাহিদা
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন পাওয়া যায়
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অসুবিধা
- অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ
- পাঠকের শেষকথা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইন্টারনেট দুনিয়ায় আধুনিক যুগে ডিজিটাল মার্কেটিং এ অনলাইন ইনকামের জন্য এটি একটি জনপ্রিয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম।অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বলতে বোঝায় আপনি কোন কোম্পানির অ্যাফিলিয়েট লিংক ব্যবহার করে তৃতীয় কোন ব্যক্তির কাছে আপনার লিংক ব্যবহারের মাধ্যমে ওই কোম্পানির পণ্য বিক্রি করে দিতে পারেন তাহলে ওই কোম্পানি আপনাকে একটা কমিশন দিবে আর আপনি পণ্য বিক্রি করা ফলে যে কমিশনটা পেলেন এটাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
তবে কোম্পানিগুলো বিশ্বস্ত কোম্পানী হতে হবে যেমন: অ্যামাজন ডটকম, দারাজ ডটকম এবং আলীএক্সপ্রেস এর মত কিছু বিসস্ত কোম্পানি কাছে থেকে আপনাকে লিংকটি নিতে হবে। কারণ আপনি যখন অন্য কোন ব্যক্তির কাছে পণ্য বিক্রি করবেন পণ্যের গুণগত মান ঠিক না থাকলে আপনার মার্কেটিং প্লেস ভালো থাকবে না এমনকি মার্কেটিং প্লেস হারিয়ে যেতে পারে। এজন্যে আপনাকে বিশ্বস্ত কোম্পানির কাছে থেকে লিংক নিয়ে পণ্য বিক্রয় করতে হবে।
এছাড়াও এসব ব্যান্ড কোম্পানির লিংক থেকে পণ্য বিক্রয় করলে আপনি বেশি কমিশন পাবেন এবং বেশি লাভবান হবেন। আপনি প্রতিদিন যত পণ্য বিক্রি করতে পারবেন তত কমিশন পাবেন এবং আপনার মার্কেট প্লেস ততোই ভালো হবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কোন অর্থের প্রয়োজন হয় না এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ঘরে বসে এমনকি যেকোনো জায়গায় থেকে করা যায় দেখে এই মার্কেটপ্লেসটি সবার কাছে পছন্দনীয়।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় ধাপসমূহ
একটি নিস বা প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন ঃপ্রথমে আপনি আপনার একটি পছন্দের প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন যেটাতে আপনি বেশি আগ্রহী। তবে প্রোডাক্টটি নির্বাচন করার আগে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে বাজারে সে প্রোডাক্টের চাহিদা কেমন । বাজারে যে সকল পণ্যর চাহিদা সব সময় বেশি এবং মানুষ বেশি কিন্তু আগ্রহী সে সকল পণ্য আপনি মার্কেটিং করতে পারলে বেশি লাভবান হবেন। যেমন :বিউটি প্রোডাক্ট, ইলেকট্রনিক প্রোডাক্ট, হেয়ার প্রোডাক্ট এবং বিভিন্ন ড্রেস ইত্যাদি।সঠিক পণ্যটি নির্বাচন করতে পারলে মার্কেটিংয়ে আপনি সফল হবেন।
একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করুন ঃ আপনি যে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে প্রোডাক্টগুলো বিক্রি করবেন তা কোন প্লাটফর্মের মাধ্যমে বিক্রি করবেন সে প্লাটফর্ম তৈরি করুন যেমন এটি হতে পারে ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল অথবা যেকোন সোশ্যাল মিডিয়া। ব্লগ ওয়েবসাইটে মার্কেটিং করতে হলে আপনাকে প্রথমে যে প্রোডাক্টটি বিক্রি করতে চান সে প্রোডাক্টটির বিষয়ে ভালোভাবে জেনে একটি সুন্দর কনটেন্ট তৈরি করতে হবে যাতে কনটেন্টটি পড়ে কাস্টমার আপনার প্রোডাক্টটি কিনতে আগ্রহি হয়। এছাড়াও ইউটিউব চ্যানেলে প্রোডাক্ট এর বর্ণনা দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করুন ঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হতে হবে।যেমন :Amazon.com, Daraz.com,এবং CJ affiliate ইত্যাদি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত হতে হবে। যখন আপনি কোন কোম্পানির প্রোডাক্টের কনটেন্ট তৈরি করবেন কনটেন্টে এফিলিয়েটে লিংক যুক্ত করতে হবে এবং লিংকগুলো এমন জায়গায় রাখবেন যেন পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ হয় এবং ক্লিক করতে আগ্রহী হয়। যখন সেই লিংক ব্যবহার করে কেউ পণ্য কিনবে আপনি সেখান থেকে কমিশন পাবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর সুবিধা
প্রাথমিক বিনিয়োগের প্রয়োজন নেই ঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কোন পুঁজি বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না। অন্যান্য ব্যবসা বাণিজ্য করতে যেমন পণ্য কিনতে হয় বাজারজাত করতে হয় এগুলা করতে বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে কোন বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না। আপনি একটি ব্লগ ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারেন। আপনি বিভিন্ন ই কমার্স প্ল্যাটফর্ম থেকে করতে পারেন।
যেকোন জায়গাই কাজ করা যায় ঃ যেমন অ্যামাজন, ক্লিক ব্যাংক, দারাজ ইত্যাদি কোম্পানি থেকে পণ্যর অ্যাফিলিয়েট লিংক নিয়ে বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর লিংক প্রচার করে মার্কেটিং করতে পারেন।ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবস্থা থাকলে এটি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে থেকে যেকোনো সময় করা যায়।আপনার যদি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রতি আগ্রহ থাকে তাহলে আপনি একটি ওয়েবসাইট বানিয়ে অথবা একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে পারেন।
কাজের স্বাধীনতা রয়েছে ঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি স্বাধীন পেশা এটি আপনাকে নিজের ব্যক্তিগত জীবনে স্বাধীনতা দিবে । অন্যান্য চাকরি বা কাজের জন্য সময় নির্ধারিত করা এবং অন্য কারো আদেশে বা সিদ্ধান্তে মেনে আপনাকে কাজ করতে হয়। কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ আপনি আপনার সুবিধামতো যেকোনো সময়ে কাজ করতে পারবেন। বিশেষ করে যারা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে চায় তাদের জন্য অনেক সুবিধা।
সীমাহীন আয়ের সুযোগ ঃ এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে নির্দিষ্ট আয়ের কোন সীমা নেই। এফিলিয়েট মার্কেটিং আয় নির্ভর করে আপনার উপর আপনি আপনার কনটেন্টি যত বেশি আকর্ষণীয় ভাবে লিখে দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে পারবেন এবং আপনার শেয়ার করা লিংকের মাধ্যমে মানুষ যত পণ্য কিনবে আপনার তোত লাভ হবে। অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটাররা মাসে লক্ষাধিক টাকা ইনকাম করে থাকে। এটি নির্ভর করে আপনার উপর আপনি চাইলে কার্যক্রম বাড়াতে পারেন নতুন নতুন কনটেন তৈরি করুন যাতে দর্শকরা পন্যটি কিনতে বেশি আগ্রহী হয়।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ আয় করার সেরা উপায়
ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে ঃ ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বেশ কার্যকরী হবে । কারণ ইন্টারনেট জগতে ফেসবুক ব্যবহার করে না এরকম লোকের সংখ্যা খুব কম ফেসবুক একটি বিশাল প্ল্যাটফর্ম। প্রথমে আপনি ফেসবুকে পেজ বা গ্রুপ তৈরি করুন এবং সেখানে অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করুন। এছাড়াও সবথেকে কার্যকারী হবে ফেসবুক লাইভে অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্টি প্রমোট করলে। এবং সেখানে প্রডাক্টের প্রয়োজনীয় তথ্য ব্যাখ্যা করুন এতে বিশ্বাস বাড়বে এবং প্রডাক্টি কিনতে ক্রেতারা বেশি আগ্রহ করবে।
ব্লগ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ঃ প্রথমে আপনি আপনার পছন্দমত প্রোডাক্ট বাছাই করে নিবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে বাজারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে বর্তমান বাজারে কোন প্রোডাক্টের চাহিদা ক্রেতাদের কাছে বেশি। আপনার ব্লগ ওয়েবসাইটে প্রোডাক্ট সম্পর্কে সুন্দরভাবে বিশ্বাসযোগ্য করে একটি কন্টেন্ট উপস্থাপন করবেন যাতে দর্শকরা কনটেন্টি পড়ে বিশ্বস্ততা অর্জন করতে পারে।এবং সেখানে পণ্যর একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করে দিবেন।যাতে দর্শকরা কনটেন্টি পড়ে আপনার দেয়া লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্টটি কিন্তু আগ্রহী হয়।
ইউটিউব এর মাধ্যমে ঃ আজকাল সবাই নিজের চোখে দেখে পন্য কিনতে বেশি পছন্দ করে। আপনার ইউটিউব চ্যানেল খোলা থাকলে সেখানে আপনি প্রোডাক্টের সুন্দর কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে একটি ভিডিও বানিয়ে উপস্থাপন করতে পারেন। এবং ভিডিও নিচে একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করে দিবেন। যাতে ক্রেতারা আপনার ভিডিওটি দেখে এবং ভিডিওটি দেখে পণ্যটি পছন্দ হলে আপনার দেয়া লিংকে ক্লিক করে পন্যটি কিনতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি ভালো কোম্পানির পণ্য সেল করে থাকবেন এতে আপনার বিক্রি বেশি হবে।
জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম মাধ্যম
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমানে একটি জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকাম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।কারন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে তেমন পুজির প্রয়োজন হয় না। এখানে আপনার মার্কেটিং করতে কোন পন্যর প্রয়োজন পড়েনা এবং কোন পন্য স্টক করে রাখার প্রয়োজন হয় না। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করার জন্য প্রথমে আপনাকে জানতে হবে বর্তমান বাজারে কোন কোন পন্যর চাহিদা সবথেকে বেশি। সেই চাহিদা অনুযায়ী আপনাকে সঠিক প্রোডাক্ট নির্বাচন করতে হবে।এবং আপনাকে একটি নিজস্ব ব্লগ ওয়েবসাইট খুলতে হবে।
আপনাকে সেখানে প্রডাক্ট সম্পর্কে একটি সুন্দর কন্টেন্ট উপস্থাপন করতে হবে। এমন ভাবে কন্টেন্ট টি উপস্থাপন করতে হবে যাতে ক্রেতার মন প্রডাক্টির প্রতি আকর্ষিত হয়। সেখানে আপনার একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করতে হবে।যাতে ক্রেতা লিংক এ ক্লিক করে প্রডাক্ট টি কিনতে পারে।এছাড়াও ইউটিউব, ফেসবুক এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়।আপনি যদি ক্রেতার কাছে বিশস্ততা অর্জন করতে পারেন তাহলে আপনি মার্কেটিং ভালো করতে পারবেন।
একবার একটি ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে পারলে সেখানে অ্যাফিলিয়েট লিংক যুক্ত করে দিলে যদি আপনি মারকেটপ্লেসে সেট আপ হয়ে যেতে পারেন তাহলে দীর্ঘদিন ধরে মার্কেটপ্লেসে আপনার এই লিংক থেকে যত পণ্য বিক্রি হবে আপনি তাতেই কমিশন পেতে থাকবেন এই আয়ের ধারা চলতে থাকবে।নিয়মিত ক্রেতা আসতে থাকলে আপনি এখান থেকে স্বয়ংক্রিয় ভাবে কোম্পানির কাছে থেকে কমিশন পেতে থাকবেন।এবং এটি আপনার প্যাসিভ ইনকামে রুপান্তরিত হবে।
বর্তমানে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর চাহিদা
বর্তমানে অ্যাফিলেট মার্কেটিং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে কারণ এটি একটি লাভজনক মার্কেটিং ব্যবসা। কারণ অন্যান্য ব্যবসা করতে অনেক পুঁজির প্রয়োজন হয় কিন্তু অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পূজির প্রয়োজন হয় না। মার্কেটিং কৌশল ব্যবহার করে ব্লগ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পন্য সম্পর্কে কনটেন্ট তৈরি করে অথবা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে এছাড়াও বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায়।
যাদের কাছে ব্যবসা করার জন্য প্রয়োজনীয় পুজি নেই তারা সহজে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে মাস শেষে ভালো টাকা আয় করতে পারেন। বর্তমানে ব্যস্ত জীবনে মানুষ সময় সাশ্রয়ের জন্য মানুষ অনলাইনে কেনাকাটা করতে পছন্দ করে। বর্তমানে বড় বড় ই কমার্স কোম্পানি গুলো যেমন অ্যামাজন, ফ্লিপকার্ট দারাজ ইত্যাদি কোম্পানি তাদের বিক্রি বাড়াতে এফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবহার করে। এতে কোম্পানিগুলো তাদের সকল পণ্য পৃথিবীর সকল মানুষের কাছে বিক্রি করতে পারে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্লগ ওয়েবসাইটে পণ্য সম্পর্কে যত ভালো কনটেন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং মানুষদের আকর্ষিত করতে পারবেন আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক থেকে মানুষ বেশি পণ্য কিনবে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং লিংক দিয়ে যত পন্য বিক্রয় করতে পারবেন তত বেশি কমিশন পাবেন। এবং এটি যদি মার্কেটেস্থায়ী করতে পারেন তাহলে এখান থেকে সারা জীবন কমিশন পেতে থাকবেন যতদিন পর্যন্ত আপনার অ্যাফিলিয়েট লিংক থেকে পন্য বিক্রয় হবে।
এটি একটি জনপ্রিয় প্যাসিভ ইনকামে পরিণত হয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর আরো সুবিধা হল এটি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে করা যায়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং যেকোনো সময় পার্ট টাইম জব হিসাবে আপনি বেছে নিতে পারেন। বিশেষ করে যারা ফুল টাইম কাজ করতে পছন্দ করেন না তাদের জন্য অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং একটি সুবিধা জনক মার্কেটিং। এ মার্কেটিং করার জন্য আপনার কারো কাছে জবাবদিহিতা করতে হয় না
আপনি কিছু কৌশল ব্যবহার করে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে মাসে লক্ষ টাকা আয় করতে পারেন। তার জন্য আপনাকে ক্রেতা চাহিদা এবং বাজার ব্যবস্থা বুঝতে হবে কোন পণ্যর চাহিদা বেশি সে পণ্য দিয়ে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হবে। এবং আপনি একাধিক কোম্পানির অ্যাফিলিয়েটলিংক ব্যবহার করতে পারেন একাধিক লিংক ব্যবহার করার ফলে আপনি বিভিন্ন কোম্পানি অ্যাফিলিয়েট লিংক থেকে থেকে মাস শেষে ভালো আয় করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ কত পারসেন্ট কমিশন পাওয়া যায়
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে কমিশনের হার নির্ভর করে বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্টের ওপর। তবে নির্ধারিত করা কমিশন থেকে মার্কেটপ্লেস অনুযায়ী কোন কোন সময়ে কমিশনের হার ভিন্ন হতে পারে। বিভিন্ন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠান এর ক্ষেত্রে অনেক বেশি অ্যাফিলিয়েট কমিশন পাওয়া যায় এখানে থেকে কোম্পানি এফিলিটদের ১০০% পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে। কমিশন পাওয়ার ক্ষেত্রে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটরের কাজের আগ্রহ বেড়ে যায়।
ই-কমার্স সাইটে ঃ আপনি আপনার প্রোডাক্ট নির্বাচন করুন কোন প্রোডাক্টটি নিয়ে আপনি কাজ করবেন। অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট এর উপর নির্ভর করে আপনার কমিশন নির্ধারিত হয়। কি কমার্স সাইটে অ্যাফিলেট কমিশনের হার ১% থেকে ২০ % পর্যন্ত হয়ে থাকে।যেমনঃ ফ্যাশন প্রোডাক্ট এর জন্য ১ থেকে ১০% পর্যন্ত হয়ে থাকে। ইলেকট্রিক পণ্যের ক্ষেত্রে কমিশন একটু কম পাওয়া যায় ২% হয়ে থাকে।বিভিন্ন অনলাইন কোর্স পাওয়া যায় এগুলো এফিলিট মার্কেটিং করলে বেশি কমিশন পাওয়া যায় ৩০% থেকে ৫০% হয়ে থাকে।
অ্যামাজন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামে ঃ অ্যামাজন কোম্পানির বিভিন্ন প্রোডাক্টের এর জন্য বিভিন্ন ভাবে কমিশন দিয়ে থাকে। অ্যামাজন কোম্পানি বিউটি প্রোডাক্ট এর জন্য অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে ৫%থেকে ১৫% পর্যন্ত কমিশন দিয়ে থাকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটারদের। এবং ডিজিটাল প্রোডাক্ট এর জন্য বিউটি প্রোডাক্ট থেকে ১০% বেশি কমিশন দেয়া হয়। এবং ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট এর জন্য ২%থেকে ১০% পার্সেন্ট কমিশন দেওয়া হয়। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অফার অনুযায়ী কমিশনের হার বাড়তে পারে।
দারাজ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম ঃ সাধারণ ভাবে দারাজ অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম থেকে ২% থেকে ১০% কমিশন দেয়া হয়। এই আফিলিয়েট প্রোগ্রামে ইলেকট্রিক প্রোডাক্ট এর জন্য কমিশন একটু কম হয়ে থাকে ৩% থেকে ৫% পর্যন্ত হয় । ফ্যাশন প্রডাক্ট এর জন্য ১২% থেকে ১৭% কমিশন দিয়ে থাকে।এবং হোম ফার্নিচার এর জন্য ৮.৬১% দিয়ে থাকে। বিভিন্ন রকম বই সেলের জন্য ১২% কমিশন পেয়ে থাকে অ্যাফিলিয়েটরা।এছাড়াও বিভিন্ন ওকেশনে অ্যাফিলিয়েট প্রডাক্ট কোম্পানিগুলো বিভিন্ন রকম বোনাস কমিশন দিয়ে থাকে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর অসুবিধা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ সুবিধা রয়েছে পাশাপাশি অসুবিধা রয়েছে এগুলো নিচে তুলে ধরা হলো
প্রতিযোগিতার হার বেশি ঃ এফিলেট মার্কেটিং এ দিন দিন প্রতিযোগিতার হাড় বেরিয়ে চলেছে।এই প্ল্যাটফর্মে অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটে রয়েছে এখানে টিকে থাকা খুব কষ্টকর। আপনি যদি কোন জনপ্রিয় প্রোডাক্ট সার্ভিস করতে চান তাহলে দেখবেন এই প্রোডাক্টের আরো অনেক প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছে। কোন লাভ হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনার প্রচার করা লিংক থেকে কেউ কোন পণ্য ক্রয় না করবে। পণ্য ক্রয় করলে আপনি কমিশন পাবেন আর কেউ আপনার লিংক থেকে পণ্য না ক্রয় করলে আপনি কোন কমিশন পাবেন না।
সময় সাপেক্ষ ঃ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে ধৈর্যের প্রয়োজন এবং এটি সময় সাপেক্ষ।আপনাকে প্রথমে একটি ব্লগ ওয়েবসাইটে আকর্ষণীয় কনটেন্ট তৈরি করে অথবা ইউটিউব চ্যানেলের কনটেন্ট এর মাধ্যমে ভিডিও বানিয়ে সে পণ্য সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে এবং সেখানে লিংক শেয়ার করতে হবে। সেখানে লিংক শেয়ার করার সাথে সাথে আপনার পণ্য কেউ কিনবে না একটি ভালো প্রোডাক্টের জন্য অনেক অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার প্রতিযোগি থাকে। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে অনেক ধৈর্য এবং কঠোর পরিশ্রম সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।
অনিশ্চয়তা ঃ অন্যান্য চাকরি বা ব্যবসার ক্ষেত্রে যেমন নির্দিষ্ট মাসে টাকা পাওয়া যায় কিন্তু এখানে আয়ের কোন নিশ্চয়তা নেই আপনি কোন মাসে বেশিও আয় করতে পারেন আবার কোন মাসে আয় না করতেও পারেন। আপনার শেয়ার করা লিংকের মাধ্যমে যদি কেউ কোন প্রোডাক্ট কিনে তাহলে আপনি কমিশন পাবেন। আর যদি কেউ কোন প্রোডাক্ট না কিনে তাহলে আপনি কোন কমিশন পাবেন না। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এ আয়ের কোন নিশ্চয়তা থাকেনা।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ভবিষ্যৎ
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বিগত কয়েক বছর ধরে সফলতার হাত ধরে বৃদ্ধি পেয়ে আসছে। ভবিষ্যতে অ্যাফিলিয়েটরা আরো সফলতা অর্জন করবে। এফিলিয়েট মূলত কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য তৃতীয় ব্যক্তি কে অন্তর্ভুক্ত করা। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে কোম্পানিকে সহজে তার ক্রেতার কাছে পৌঁছানো হয়। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ইউটিউব ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্ম গুলোতে লিংক ব্যবহার করা যায় বর্তমান সময়ে মানুষ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে করা যায় দেখে এফিলিয়েটদের পণ্য বিক্রির পরিধি ক্রমাগত বাড়ছে।সাথে সাথে ভবিষ্যতে এফিলিয়েয়েটদের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। বর্তমানে মোবাইল ব্যবহার করে না এমন মানুষ সংখ্যা অতি নগণ্য। মোবাইলে ভিডিও দেখার মাধ্যমে মানুষ পন্য কিনতে বেশি আগ্রহী ভবিষ্যতে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর এ গুরুত্ব আরো বাড়বে বলে আমি মনে করি।অন্যান্য ব্যবসা করতে যেমন পুজির প্রয়োজন হয় অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পুজির প্রয়োজন হয় না দেখে মানুষ এটার প্রতি বেশী আগ্রহী।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কোন পুজি স্টক করে রাখতে হয় না। এখানে শুধু একটি এফিলিয়েট লিংক দিয়ে ব্যবসা করে সফল হওয়া যায়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ব্যবসা করার ক্ষেত্রে এফিলেটদের ব্যবসায়িদের কোন ক্ষতি নেই কিন্তু অ্যাফিলিয়েটদের অবশ্যই বিশ্বস্ততার সাথে মার্কেটিং করা উচিত যেমন কনটেন্টে সঠিক তথ্য তুলে ধরা উচিত এবং ইউটিউব ভিডিও বানানোর সময় ভালো পণ্য গুণগতমান সঠিক দেওয়া উচিত তাহলে ভবিষ্যতে আরো উন্নত হতে পারবেন এবং আপনার ভবিষ্যৎ আরো উজ্জ্বল হবে।
পাঠকের শেষকথা
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কি এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং কীভাবে শুরু করব এ সম্পর্কে উপরের উক্ত আর্টিকেলটি পড়ে ভালোভাবে জেনেছেন।আশাকরি পুরো আর্টিকেল টি পড়লে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করে নিজের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গঠন করতে আগ্রহী হবেন।তবে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে প্রচন্ড ধৈর্য এবং চেষ্টা প্রয়োজন। কারণ এফিলেট মার্কেটিং এ অনেক সুযোগ সুবিধা থাকাই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রতি সবাই আগ্রহী এবং এতে প্রতিযোগিতার হার অনেক বেশি।
তবে আপনার চেষ্টা থাকলে আপনি অবশ্যই একজন সফল অ্যাফিলিয়েট হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে পারবেন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে ঘরে বসে আয় করা যায় এবং এতে কোন পুজির প্রয়োজন হয় না। এবং ভবিষ্যতে এটি প্যাসিভ ইনকামে রূপান্তরিত করা যায় দেখে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং বর্তমান বাজারে অর্থ উপার্জনের জন্য জনপ্রিয় উপায়। আপনাদের কাছে পুরো আর্টিকেলটি পড়ে যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে মার্কেটিং সংগতিপূর্ণ কোন প্রশ্ন থাকলে আমাদের জানাবেন।কোন ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন আল্লাহাফেজ ।
সেভাঘর ডট কম ওয়েবসাইট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন '#'
comment url