মেয়েদের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো

মেয়েদের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো এবং শ্যাম্পু ব্যবহারের সঠিক নিয়ম এই সম্পর্কে কি আপানারা চান ? যদি জেনে না থাকেন তাহলে পুরো আর্টিকেল টি আপনাদের জন্য । এছাড়াও  এই আর্টিকেল এ বিস্তারিত ভাবে জানতে পারবেন চুলে সপ্তাহে কয়বার  শ্যাম্পু ব্যবহার করা লাগবে ।

মেয়েদের-জন্য-কোন-শ্যাম্পু-সবচেয়ে-ভালো

এছাড়াও জানতে পারবেন বাজারের সেরা ৫ টি আয়ুর্বেদিক হারবাল শ্যাম্পু সম্পর্কে যা আপনাদের চুলের জন্য অনেক উপকারি। অতিরিক্ত খুসকির জন্য কোন শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত এবং অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যাবহারের অপকারিতা।এই সকল বিষয়ে জানার জন্য পুরো আর্টিকেল টি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। 

 পোস্ট সুচিপত্রঃ মেয়েদের জন্য সবচেয়ে কোন শ্যাম্পু ভালো

মেয়েদের জন্য কোন শ্যাম্পু সবচেয়ে ভালো

মেয়েদের জন্য সবচেয়ে কোন শ্যাম্পু ভালো তা পুরোপুরি  নির্ভর করে আপনাদের চুলের ধরনের উপর এবং  চুলে কোন কোন সমস্যা রয়েছে সে সমস্যার সমাধানে কোন শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন।বাজারে  বিভিন্ন ধরনের ব্যান্ডের  শ্যাম্পু পাওয়া যায় এরমধ্যে ভালো মানের শ্যাম্পু  রয়েছে আবার নিম্ন মানেরও শ্যাম্পু  রয়েছে। শ্যাম্পু আপনাকে আপনার চুলের সমস্যার উপর নির্ভর করে বাছাই করতে হবে আপনার  চুলের  জন্য  কোনটা উপকারী । নিচে  কিছু কার্যকারী শ্যাম্পুর কথা  তুলে ধরা হলো। 

ডাভ শ্যাম্পু ঃ ডাভ শ্যাম্পু আমাদের সবার কাছে পরিচিত একটি শ্যাম্পু।শ্যাম্পু ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই আমাদের পি এইচ মান জেনে শ্যাম্পু ব্যবহার  করতে  হবে । ডাভ শ্যাম্পুর পি এইচ মান ৫.৫ যা আমাদের চুলের জন্য একেবারে কার্যকরী মান। ডাভ শ্যাম্পু আমাদের রুক্ষ এবং ড্রাই চুলের জন্য অনেক উপকারী।ডাভ শ্যাম্পুতে রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান যা আমাদের চুলেকে ন্যাচারাল  ভাবে সুন্দর করে তোলে।  ডাভ শ্যাম্পু ব্যবহারে আমাদের চুলকে নরম ও মসৃণ করতে সহায়তা করে।

লোরিয়াল শ্যাম্পু ঃ লোরিয়াল শ্যাম্পু  চুলের জন্য অনেক উপকারি। লোরিয়াল শ্যাম্পুর  মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ই সিরামাইড এবং প্রচুর প্রোটিন যা প্রাকৃতিক উপাদান ভরপুর একটি শ্যাম্পু।লোরিয়াল শ্যাম্পু  চুলের শুস্কতা দূর করে এবং রুক্ষ ও ড্যামেজের হাত থেকে চুলেকে রক্ষা করে। লোরিয়াল শ্যাম্পু নিয়মিত  ব্যবহারের ফলে মাথা থেকে অতিরিক্ত  তেল বের করে দিয়ে চুলেকে ঝলমলে ও নরম করে তোলে। এই শ্যাম্পু  ব্যাবহারের ফলে চুলেকে গোড়া থেকে মজবুত করতে সহায়তা  করে।

ডাবর ভাটিকা ঃ ডাবর ভাটিকা শ্যাম্পু একটি প্রাকৃতিক শ্যাম্পু এড় মধ্যে রয়েছে সকল প্রাকৃতিক উপাদান। ডাবর ভাটিকা শ্যাম্পুর মুল উপাদান হল আমলা,নিম,অলিভ অয়েল,হেনা, আলমন্ড এবং কোকোনাট অয়েল এই সকল উপাদান চুলকে ভেতর থেকে পুস্টি জোগায় এবং চুলেকে গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত মজবুত করে । অলিভ অয়েল এবুং কোকোনাট অয়েল চুলেকে মসৃণ ও চকচকে করে তোলে। এর মধ্যে রয়েছে নিম উপাদান যা আন্টি ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে এবং মাথার স্কাল্পের ময়লা দূর করে খুসকি কমাতে সাহায্য করে।

অ্যান্টি অ্যাসিড ঃ অ্যান্টি অ্যাসিড শ্যাম্পু চুলের পি এইচ ব্যালেন্স নিয়ন্ত্রণ করে। এবং চুলের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান এর মধ্যে বিদ্যমান থাকে।অ্যান্টিঅ্যাসিড শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে মাথার স্কাল্পের অতিরিক্ত তেল দূর করে দূর হয়ে যায়।ফলে মাথায় ময়লা জমতে পারেনা এবং মাথার খুসকি দূর করতে সাহায্য করে। এই শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যাবহারের মাথার চিটচিটে ভাব দূর হয় এবং চুলকে সাইনিং করে তোলে।এছাড়াও এটি ড্যামেজ ও রুক্ষ চুলকে পুস্টি জুগিয়ে চুলকে মজবুত করে তোলে।

শ্যাম্পু ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

শ্যাম্পু ব্যবহারের আগে আগে আমাদের শ্যাম্পু কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তার পরিপূর্ণ নিয়ম জানতে হবে না হলে পুরোপুরি উপকার পাওয়া যাবে না। শ্যাম্পু চুলে ব্যবহারের জন্য কয়েকটি ধাপ নিচে দেওয়া হলো ।

প্রথমত ঃ আমাদের চুলগুলো সুন্দর করে আছড়িয়ে নিতে হবে জেন চুলে জোড় না থাকে। তারপরে পুরো চুল পরিষ্কার পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে আমাদের। তারপরে আমরা যে শ্যাম্পু ব্যাবহার করবো সে শ্যাম্পুটি একটি বাটিতে নিয়ে তারমধ্য সামান্য পানি নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। যাতে শ্যাম্পুর লিকুইড ঘনত্ব কমে যায় এবং ভালোভাবে ফেনা সৃষ্টি হয়।

দ্বিতীয়ত ঃ তারপর শ্যাম্পু গুলো পুরো মাথায় ভালোভাবে দিয়ে নিতে হবে। এবং মাথার স্কাল্পে দুই হাতের আঙ্গুল দিয়ে ভালোভাবে পাঁচ মিনিট মেসেজ করতে হবে। মাথার স্কালপে মেসেজ করলে মাথার স্কাল্পের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং মাথার স্কাল্পের চিটচিটে ময়লা ভালোভাবে পরিষ্কার হয়। এতে খুসকি হওয়ার সম্ভবনা অনেক কমে যায়। তারপরে পুরো মাথা ভালো ভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। মাথায়  যেন  একটুও শ্যাম্পুর ফেনা  না থাকে। 

তৃতীয়ত ঃ পরিষ্কার চুলের অগ্রভাগে ভালোভাবে কন্ডিশনার লাগিয়ে নিতে হবে। তবে কন্ডিশনার লাগানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে এটা মাথার স্কাল্পে লাগানো যাবে না। কন্ডিশনার দেয়ার পরে দুই থেকে চার মিনিট রেখে দিতে হবে তারপরে পরিষ্কার পানি দিয়ে চুলগুলো ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। চুলগুলো ধোয়ার পরে পরিষ্কার একটি নরম কাপড় দিয়ে চুলগুলো আলতো করে মুছে ফেলতে হবে এবং চুলগুলো ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে কারণ ভেজা চুলে ছত্রাক সৃষ্টি হয় এবং খুশকি জন্ম নেয়।

সপ্তাহে চুলে শ্যাম্পু কয়বার ব্যাবহার করা যায়

সপ্তাহে চুলে কয়বার শ্যাম্পু করবেন তা নির্ভর করে আপনার চুলের ধরনের ওপর। তবে অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা আমাদের কোন সময় উচিত নয়। আমাদের যাদের নরমাল স্বাভাবিক চুল তাদের জন্য সপ্তাহে দুইবার শ্যাম্পু করা উচিত। এতে আমাদের চুল ভালো থাকবে এবং চুল প্রাকৃতিক তেল বজায় থাকবে। এবং আমাদের মধ্যে যাদের রুক্ষ চুল তাদের সপ্তাহে একবার শ্যাম্পু করা ভালো তবে প্রয়োজনে দুই বার করা যেতে পারে। কিন্তু এর বেশি করলে চুল আরো রুক্ষ হয়ে যাবে এবং চুলের মসৃণতা নষ্ট হয়ে যায়।
 
সপ্তাহে-চুলে-শ্যাম্পু-কয়বার-ব্যাবহার-করা-যায়
 
অনেক সময় বিভিন্ন কাজের জন্য আমাদের চুলে বিভিন্ন রকম প্রাডাক্ট ব্যবহার করি সেক্ষেত্রে আমাদের প্রতিদিন শ্যাম্পু ব্যাবহার করতে হয়। রুক্ষ চুলের ক্ষেত্রে আমরা সবসময় ময়শ্চারাইজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করব এতে আমাদের চুলের রুক্ষভাব কমে নরম ও মসৃণ করে তুলবে। এবং যাদের চুল অতিরিক্ত তেলতেলে তাদের ক্ষেত্রে শ্যাম্পু সপ্তাহ দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুলের অতিরিক্ত তেলটা কমে যাবে এবং চুলের তেলের চিটচিটা ভাব কমে যাবে।

এছাড়াও আমরা বাহিরে যারা বিভিন্ন রকম কাজ করে থাকি তখন চুলে অনেক ময়লা জমে যায় এক্ষেত্রে আমাদের প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করতে হয়।বহার করতে হয় এক্ষেত্রে চুল নিয়মিত শ্যাম্পু করতে হয়। এছাড়াও আমরা আমাদের চুলকে প্রতিমাসে একবার ডিপ ক্লিনিং করে নিতে পারি এতে আমাদের চুল ভেতর থেকে পরিষ্কার হয়ে আসে। এতে চুলের সকল সকল ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস হয়ে যায় এবং মাথার স্কালপ পুরোপুরি পরিষ্কার হয়ে যায়। এতে মাথার খুশকি এবং ছত্রাক জনিত ঘা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

শ্যাম্পু ব্যবহারের উপকারিতা

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন কাজের জন্য আমরা আমাদের বেশিরভাগ সময় বাহিরে কাটায়। বাহিরের ধুলাবালি আমাদের চুলে এবং মাথার স্কাল্পে এসে পড়ে এবং চুলে মাথার স্কাল্পে ময়লা জমে থাকার কারনে চুলের অক্সিজেন বন্ধ হয়ে যায়। চুলের অক্সিজেন বন্ধ হয়ে গেলে চুল পড়া শুরু হয় এবং চুলের গুনাগুন নষ্ট হতে থাকে। নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহার করলে আমাদের চুলের ময়লা দূর হয়ে যায় এবং মাথার স্কাল্প পরিষ্কার হয়ে যায় এবং চুলের অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক থাকে।

মাথার স্কাল্পে অতিরিক্ত ময়লার কারনে মাথায় খুসকি হয়ে থাকে এছাড়াও মাথায় ছত্রাক জনিত প্রদাহ এমনকি মাথার স্কাল্পে চুলকানি সুরু হয়। নিয়মিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত শ্যাম্পু ব্যাবহার করলে এইসব সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যায়। এছাড়াও শ্যাম্পুতে রয়েছে অনেক প্রাকৃতিক উপাদান যা চুল পড়া রোধ করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে।এতে রয়েছে অনেক ভিটামিন ও মিনারেল যা চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

মাথায় ধুলাবালি জমে এছাড়াও মাথা ঘেমে চুল থেকে অনেক সময় দুর্গন্ধ বের হয় এই দুর্গন্ধ দূর করতে আমরা সুগন্ধি যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করে থাকি। ফলে সারাদিন আমাদের চুল দুর্গন্ধ মুক্ত এবং শুভাসিত থাকে।এবং নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যাবহারের ফলে চুলে প্রাকৃতিক তেল সৃষ্টি হয়। এবং কন্ডিশনার যুক্ত শ্যাম্পু ব্যাবহারের ফলে চুল থাকে নরম এবং মসৃন।

বাজারে সেরা ৫ টি আয়ুর্বেদিক হারবাল শ্যাম্পু

চুলে যত্নে আমাদের বাজারে সেরা আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু গুলো বাছাই করে নিতে হবে। কারন আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু গুলো প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি এতে ক্ষতিকর রাসায়নিক কেমিক্যাল উপাদান ব্যবহার করা হয় না যা আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী। নিচে কয়েকটি বাজারের সেরা আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পুর তালিকা দেয়া হলো যা ব্যবহার করে আপনি আপনার চুলে সঠিক যত্ন নিতে পারবেন।

হিমালয়া হারবাল শ্যাম্পু ঃ হিমালয় হারবাল শ্যাম্পু প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি একটি শ্যাম্পু এরমধ্যে ক্ষতিকর কোন রাসায়নিক কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। এর মধ্যে প্রধান উপাদান রয়েছে আমলা ও রিঠা যা আমাদের চুলের জন্য অনেক কার্যকরী। এই হিমালয় হারবাল শ্যাম্পু আমরা সপ্তাহে দুইবার চুলে ব্যবহার করতে পারি। আমলা আমাদের চুলকে গোড়া থেকে মজবুত করে রিঠা চুলে পুষ্টিযুগিয়ে দ্রুত লম্বা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি মাথার স্কাল্পকে ভালোভাবে পরিষ্কার করে এবং চুল ও মাথার স্কাল্পকে খুশকি থেকে মুক্ত রাখে।

খাদি মেহেন্দি শ্যাম্পু ঃ খাদি মেহেন্দি শ্যাম্পু প্রাকৃতিক গুণে ভরপুর একটি প্রাকৃতিক হারবাল শ্যাম্পু । এর মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক উপাদান মেহেদী, রিঠা এবং শিকাকাই যার প্রতিটি উপাদান আমাদের চুল কার্যকরী প্রভাব ফেলে। মেহেদী আমাদের চুলের গোড়া শক্ত ও মজবুত করে এবং চুলের রং কার্যকরী ভাবে ধরে রাখে। এবং সিকাকাই চুলের জন্য প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসাবে কাজ করে সাথে চুল গুলকে নরম ও মসৃণ করে তোলে। এছাড়াও রিঠা চুলের খুশকি দূর করে এবং চুলগুলোকে লম্বা করতে সাহায্য করে।

বায়োটিক হারবাল শ্যাম্পু ঃ বায়োটিক হারবাল শ্যাম্পু রাসায়নিক মুক্ত প্রাকৃতিক ভেসজ উপাদান দিয়ে তৈরি এই শ্যাম্পু। এই শ্যাম্পুর মূল উপাদান হলো নিম, তুলসী, ভৃঙ্গরাজ, শিকাকাই ও রিঠা যা সবকিছুই প্রাকৃতিক উপাদান। এই শ্যাম্পুর বিশেষত্ব হলো এ শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যাবহারের ফলে আপনার চুলের খুশকি দূর হবে চুল আরো লম্বা ও ঘন এবং মজবুত করতে সহায়তা করে।এই শ্যাম্পুর মধ্যে রয়েছে নিম যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে এবং তুলসী যা আমাদের মাথায় স্কাল্পে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং নতুন চুল গজাতে সাহায্য কর। ।

ইন্দুলেখা আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পু ঃএই ইন্দুলেখা আয়ুর্বেদিক শ্যাম্পুর মধ্যে রয়েছে সকল প্রাকৃতিক উপাদান আলমন্ড, ভিঙ্গরাজ, অ্যালোভেরা, নীলিনি এবং আমলা যা সকল উপাদান আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী। এই শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যবহারের ফলে এর মধ্যে থাকা উপাদান ভিঙ্গরাজ আমাদের চুলের আকাল পড়া রোধ করে এবং আমলা চুলকে মজবুত ও বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে। এছাড়াও এলোভেরা চুলের আদ্রতা ও শুষ্কতা দূর করে এবং নিলিনি চুলের প্রাকৃতিক কালো রঙ ধরে রাখে। আলমন্ডে থাকা ভিটামিন ই চুলকে স্বাস্থ্যকর উজ্জ্বল করে।  

কেশকিং হারবাল শ্যাম্পু ঃ কেশকিং হারবাল শ্যাম্পু আপনার চুলে প্রাকৃতিক  ভাবে পুস্টি জুগিয়ে  আপনার চুলের সমস্যা সমাধান করে আপনার মনের মতো  করে তুলবে। এই শ্যাম্পুর মধ্যে ব্যবহৃত  তুলসী, অ্যালোভেরা, নিম, আমলা এবং ভৃঙ্গরাজ এই সকল প্রত্যেকটি উপাদান প্রাকৃতিক উপাদান । এটি সঠিক নিয়মে ব্যবহার করলে আপনার চুল পড়া রোধ হবে এবং চুলকে মজবুত ও লম্বা করে তুলবে। এছাড়াও এর মধ্যে রয়েছে কিছু অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান তুলসী ও নিম যা আমাদের মাথার স্কাল্পের খুশকি এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত জীবাণু ধ্বংস করতে সহায়তা করে। 

 অতিরিক্ত খুশকি দূর করতে ব্যবহৃত শ্যাম্পু 

আমরা আমাদের বেশিরভাগ সময় কর্ম ব্যস্ততার কারণে বাহিরে কাটায়।ফলে বাইরের রাস্তাঘাটে নোংড়া ধুলাবালি আমাদের চুলের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে।এবং অতিরিক্ত ময়লা  জমে থাকার কারণে মাথায় খুশকি সৃষ্টি হয়  এই খুশকি থেকে পরবর্তীতে মাথায় চুলকানি এবং ঘা সৃষ্টি  হতে পারে যা আমাদের মাথার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। এজন্য আমাদের নিয়মিত শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। অতিরিক্ত খুশকি দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু শ্যাম্পুর তালিকা নিচে দেয়া হল ঃ

হেড এন্ড সোল্ডার্স শ্যাম্পু ঃ এই শ্যাম্পু চুলে নিয়মিত ব্যবহারের ফলে খুশকি দূর হতে সাহায্য করে। শ্যাম্পুর মধ্যে রয়েছে জিংক ও পাইথরিওন নামক বিশেষ উপাদান যা মাথার স্কাল্পের ব্যাকটেরিয়া গুলোকে ধ্বংস করতে সাহায়তা করে। মাথার স্কাল্প অতিরিক্ত শুষ্ক থাকলে খুশকি সৃষ্টি হয় এছাড়াও অতিরিক্ত তেল ব্যবহারে মাথায় খুশকি সৃষ্টি হতে পারে। শ্যাম্পুর পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক না থাকলেও মাথায় খুশকি সহ আরো অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয় । এই হেড এন্ড শোল্ডার শ্যাম্পু পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক রেখে চুলের আদ্রতা ধরে রাখে।

ম্যাট্রিক্স বায়োলাজ স্কাল্প থেরাপি অ্যান্টি ড্যানড্রপ শ্যাম্পু ঃ এ শ্যাম্পু চুলের খুশকি দূর করতে কার্যকরী সমাধান দিয়ে থাকে। এই শ্যাম্পুর মুল উপাদান জিংক ও পাইথরিওন যা আমাদের মাথার স্কাল্পের ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসগুলোকে ধ্বংস করে দেয়। শ্যাম্পু ব্যবহারে পূর্বে অবশ্যই আমাদের পি এইচ ব্যালেন্স দেখে শ্যাম্পু কিনতে হবে।এ শ্যাম্পুর পি এইচ ব্যালেন্স ৫.৫ যা আমাদের চুলের জন্য একদম পারফেক্ট। এই শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যবহারের ফলে মাথার স্কাল্পের আদ্রতা ধরে রাখে এবং চুলকে নরম মসৃণ ও স্বাস্থ্যে উজ্জ্বল করে তোলে।

সেলসুন ব্লু অ্যান্টি ড্যানড্রপ শ্যাম্পু ঃ এই শ্যাম্পু চুলের ব্যাকটেরিয়া জনিত সমস্যা দূর করতে অধিক কার্যকরী।মাথায় অতিরিক্ত তেলের কারণে মাথার স্কাল্পে খুশকি সৃষ্টি হয় এবং এখানথেকে পরবর্তীতে প্রদাহ এবং চুলকানি সৃষ্টি হতে পারে। এই শ্যাম্পু নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে মাথার অতিরিক্ত তেল শোষণ করে নেই ফলে মাথায় খুশকি জন্ম নিতে পারেনা এবং পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকায় নিয়মিত ব্যাবহারের ফলে খুশকি একেবারে নির্মল হয়ে যায়। চুল গুলো কে ময়েশ্চারাইজিং এবং ঝকঝকে করে তোলে। 

ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি প্রাকৃতিক শ্যাম্পু 

মেয়েদের জন্য সব থেকে ভালো শ্যাম্পু হল নিজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি করা শ্যাম্পু যার প্রত্যেকটি উপাদান প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি যা আমাদের চুলের জন্য অনেক উপকারী।নিচে কয়েকটি ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি প্রাকৃতিক শ্যাম্পুর কার্যকারিতা দেয়া হল।

প্রথমত ঃ ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি শ্যাম্পুর জন্য আমরা প্রাকৃতিক উপাদান রিঠা, সিকাকায় এবং আমলা ব্যবহার করতে পারি। প্রথমে আমরা প্রত্যেকটি উপাদান ১০০ গ্রাম করে নিয়ে পানিতে সারারাত ভিজিয়ে রেখে দিব।তারপর এই গুলো সব উপাদানকে একসাথে একটি পাত্রে ১০ মিনিটের মতো জাল করে নিব যতক্ষণ পর্যন্ত না ভালো করে ফুটে না আসে।তারপরে এগুলো ভালো করে ছেকে ঠান্ডা করে নিব এবং একটি পরিষ্কার বোতলে ভরে রাখবো। এবং সপ্তাহে এটি নিয়মিত দুইবার করে মাথায় দিয়ে শ্যাম্পু করে নিব এটি চুলের জন্য অনেক কার্যকরী একটি শ্যাম্পু তৈরি হবে।

দ্বিতীয়ত ঃ আমাদের নিত্য প্রতিদিন ব্যবহৃত জিনিস দিয়ে প্রাকৃতিক শ্যাম্পু বানিয়ে ব্যবহার করতে পারি। একটা গ্রিন টি বানিয়ে ঠান্ডা করে এরমধ্য লেবুর রস মিক্স করে বোতলে ভরে রেখে আমরা নিয়মিত ব্যবহার করতে পারি। ব্যবহারের ফলে আমাদের মাথার স্কিল পরিষ্কার হয় এবং চুল সুন্দর হয়।এছাড়াও অ্যালোভেরার সাথে মধু মিশিয়ে আমরা চুলে ব্যবহার করতে পারি এটি প্রাকৃতিক শ্যাম্পু হিসেবে কাজ করে। এ সকল প্রাকৃতিক উপাদানের মধ্যে কোন রাসায়নিক কেমিক্যাল না থাকায় চুলগুলো স্বাস্থ্যউজ্জ্বল করে তোলে।
 
ঘরোয়া-পদ্ধতিতে-তৈরি-প্রাকৃতিক-শ্যাম্পু
  
তৃতীয়ত ঃ আমরা আমাদের চুলের জন্য মুলতানি মাটি এবং সরিষার খৈল ব্যবহার করতে পারি। যা আমাদের চুলের জন্য প্রাকৃতিক শ্যাম্পু হিসেবে কাজ করবে এতে কোন ক্ষতিকর পদার্থ না থাকার কারণে আমাদের চুলে সঠিক পুষ্টি যোগায়। আমরা মুলতানি মাটি একটি বাটিতে ভিজিয়ে রেখে মাটিগুলো ভালোভাবে ফুলে উঠলে এটি মাথায় ভালোভাবে ঘষে ধুয়ে ফেলতে হবে ছাড়াও সরিষার খৈল ভিজিয়ে রেখে ভালো ভাবে ফুলে উঠলে এটি ছেকে মাথায় শ্যাম্পু হিসেবে ব্যবহার করতে পারি। এই উপাদান গুলোর মধ্যে কেমিক্যাল না থাকায় আমাদের চুলের জন্য স্বাস্থ্যকর।

শ্যাম্পু ব্যাবহারের অপকারিতা

আমরা সবাই জানি শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে আমাদের চুল সুন্দর হয়। কিন্তু অতিরিক্ত রাসায়নিক শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে আমাদের চুলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। শ্যাম্পুর মধ্যে থাকা সালফেট আমাদের চুলে যে প্রাকৃতিক তেল থাকে এই তেল গুলোকে নষ্ট করে দেয় এবং চুলের আদ্রতা ভাব কমিয়ে চুলকে রুক্ষ ও শুষ্ক করে তোলে। অনেক রাসায়নিক শ্যাম্পু রয়েছে যেগুলো পি এইচ ব্যালেন্স ঠিক থাকে না এ সকল শ্যাম্পুর পি এইচ ব্যালেন্স না জেনে আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের মাথায় ব্যবহার করি ফলে মাথায় খুসকি সৃষ্টি হয়।

এমনকি মাথায় প্রদাহ জনিত ঘা এবং এলার্জি জনিত সমস্যা দেখা দেয় এছাড়াও অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে চুলের গুনাগুন নষ্ট হয়ে যায় চুল ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এতে চুলের কালার নষ্ট হয়ে যায় এবং চুলের আগা ফেটে নষ্ট হয়ে যায় এবং চুল ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ে যায়। অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারে আমাদের চুলের স্বাস্থ্য উজ্জ্বল নষ্ট হয়ে যায়। এইজন্য আমাদের চুলে অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করা যাবে না এবং আমাদের অবশ্যই চুলে প্রাকৃতিক শ্যাম্পু ব্যবহার করা উচিত। শ্যাম্পু ব্যবহারে পূর্বে অবশ্যই আমাদের পি এইচ ব্যালেন্স জেনে ব্যবহার করা উচিত।

লেখকের শেষকথা

আপনারা যদি পুরো আর্টিকেলটি পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন মেয়েদের জন্য সবচেয়ে ভালো শ্যাম্পু কোনটি হবে। এবং শ্যাম্পু ব্যবহারের নিয়ম। আপনি যদি আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী সঠিক শ্যাম্পু নির্ধারণ করতে পারেন। এবং এই শ্যাম্পু নিয়মিত ভালোভাবে ব্যাবহার করতে পারেন তাহলে আপনি আপনার চুলের সকল সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবেন। অবশ্যই চুলে শ্যাম্পু ব্যবহারের জন্য প্রাকৃতিক শ্যাম্পু বাছাই করে নিবেন এতে আপনার চুলের গুনাগুন নষ্ট হবে না।

চুলে শ্যাম্পু ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবসময় নিয়ম মেনে শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন। আপনার চুলের ধরন অনুযায়ী আপনি শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন না কারণ অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহারের ফলে চুলের প্রাকৃতিক গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাবে।এতে চুলের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাওয়ার পরিবর্তে চুলগুলো নষ্ট হয়ে যায়। শ্যাম্পু কেনার পূর্বে অবশ্যই আমরা কেমিক্যাল মুক্ত শ্যাম্পু কিনে ব্যবহার করব। 







 


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Parag
    Parag ১ নভেম্বর, ২০২৪ এ ১১:০৩ PM

    খুব সুন্দর এবং উপকারী একটি পোষ্ট |আমার অনেক উপকার হয়েছে আশা করছি ভবিষ্যতে আরো অনেক কিছু জানতে পারবো

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সেভাঘর ডট কম ওয়েবসাইট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন '#'

comment url