ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন একটি গুরুত্ব পূর্ণ প্রযুক্তি। ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের
উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটি রয়েছে। মোবাইল ফোনের উপকারিতা অপকারিতা নির্ভর করে
আপনার ব্যবহারের উপর আপনি মোবাইল ফোন কোনদিকে ব্যবহার করবেন।
আপনাদের সাথে আজকে আলোচনা করব ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
সম্পর্কে। আশাকরি আর্টিকেল টি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে আপনি বুঝতে পারবেন
আপনি মোবাইল ফোন কোনদিকে ব্যবহার করছেন।
পোস্ট সুচিপত্র ঃছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা যে কতটা তা যদি জানতে চান তাহলে মোবাইল ফোনের
সঠিক ব্যবহার করুন। মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহারের ফলে ছাত্র ছাত্রীদের লেখাপড়া
জীবন আরো সুন্দর সহজ ও সৃজনশীল করে তুলেছে। মোবাইলের সঠিক ব্যবহারে
ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পড়াশুনার যেকোনো সমস্যার সমাধান ঘরে বসে মোবাইল থেকে সহজে
সমাধান করতে পারে। যা তাদের মস্তিষ্ককে অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্ত রাখে।
মোবাইলে ইন্টারনেট সংযোগের মাধ্যমে আমরা নিত্য প্রতিদিন নতুন নতুন
তথ্য পেয়ে থাকি যা আমাদের জ্ঞানকে আর উন্নত করতে সাহায্য করে এবং নতুন নতুন
সৃজনশীল জ্ঞান তৈরি করতে সাহায্য করে। আমরা সাধারণত বাজার থেকে একটা বই কিনে পড়ি
সেখান থেকে আমরা পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে পারিনা। মোবাইলে বিভিন্ন
অ্যাপসের মাধ্যমে একসাথে আমরা বিভিন্ন লেখকের বই পড়তে থাকি যা আমাদের আউট নলেজ
বৃদ্ধি করে।
মোবাইলে বিভিন্ন অ্যাপস রয়েছে যেখানে পরীক্ষার আগে আমরা প্রতিদিন বিভিন্ন রকম
মডেল টেস্ট পরীক্ষা দিতে পারি । বিভিন্ন পরীক্ষা দেওয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের
ভুলগুলো বুঝতে পারি এবং সেগুলো সমাধান করার মাধ্যমে পরীক্ষার রেজাল্ট ভালো করতে
পারি। বর্তমানে হাজারো শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে টাকা
উপার্জন করে নিজে স্বাবলম্বী হচ্ছে এবং নিজের পড়াশোনার খরচ নিজে বহন করছে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা
শিক্ষাক্ষেত্রে মোবাইল ফোনের উপকারিতা পেতে হলে মোবাইলকে আমাদের শিক্ষার হাতিয়ার
বানাতে হবে। শিক্ষা ক্ষেত্রে ছাত্র জীবন উন্নত করতে মোবাইল ফোনের অনেক উপকারিতা
রয়েছে তা আমরা সঠিক ব্যবহার করার মাধ্যমে জানতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রকে সহজ করতে
মোবাইল ফোনের কিছু কার্যকরী উপকারিতা আলোচনা করা হলো যার মাধ্যমে আপনারা সহজে
বুঝতে পারবেন
ই-লার্নিং শিক্ষা : বর্তমানে মোবাইল ফোনে ই লার্নিং শিক্ষা পদ্ধতি আমাদের
সবার কাছে জনপ্রিয় ও সহজ পদ্ধতি।মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে ছাত্র
ছাত্রীরা পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে বসে লাইভ ক্লাস করতে পারে। এর মাধ্যমে
শিক্ষার্থীরা সকল কিছু দেখে বুঝে পড়তে পারে এবং বুঝতে না পারলে সরাসরি প্রশ্ন
করার সুযোগ থাকে । যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সমস্যাগুলো সহজে সমাধান করে নিতে
পারে। ই লার্নিং শিক্ষার মাধ্যমে সময় সাশ্রয় হয়, যাতায়াত খরচ ব্যায় হয় না
লেখাপড়ার খরচ কম হয়।
ই-বুক শিক্ষা : ক্রমশ দিন সামনের দিকে যতই এগিয়ে যাচ্ছে ছাত্রছাত্রীরা ই
বুকের দিকে ততই আগ্রহ বাড়াচ্ছে। মোবাইলে ই-বুক অ্যাপস ডাউনলোড করার মাধ্যমে আমরা
বিভিন্ন লেখকের বিভিন্ন রকম বই পড়ে নিজেদের মেধা বিকাশিত করতে পারি। এখানে একটি
বিষয় বিভিন্ন লেখকের বিভিন্নভাবে উপস্থাপন করা থাকে যা আমরা সহজে বুঝতে পারি।
আমরা মোবাইল ফোন যেখানে সেখানে নেয়া যায় দেখে আমরা ইবুকের ব্যবহার সহজে করতে
পারি।
শিক্ষামূলক অ্যাপস : অনলাইনে বিভিন্ন রকম শিক্ষামূলক অ্যাপস রয়েছে
যেগুলোর মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সাধারণ জ্ঞান অর্জন করতে পারি। বিভিন্ন ভাষা সহজে
শিখতে পারি। মোবাইলে ফোনে বিভিন্ন অ্যাপস রয়েছে যার মাধ্যমে সহজে ইংরেজি শিখতে
পারি। এছাড়াও বিভিন্ন কুইজ দিয়ে আমরা আমাদের জ্ঞানকে প্রসারিত করতে পারি।
এছাড়াও পরীক্ষার সময় আমরা বিভিন্ন শিক্ষামূলক অ্যাপস থেকে পরীক্ষার জন্য ভালো
প্রিপারেশন নিতে পারি।বিভিন্ন জবের জন্য ভালো প্রিপারেশন নিতে পারি।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা
আমাদের প্রায় প্রতিটা মুহূর্তে যোগাযোগের প্রয়োজন হয়ে থাকে সেটা হতে পারে
পরিবারের সাথে, বন্ধু বান্ধবের সাথে, শিক্ষকের সাথে অথবা যেকোনো আত্মীয় স্বজনের
সাথে। আমরা আমাদের লেখাপড়া যেকোনো সমস্যার সমাধানে আমাদের শিক্ষক অথবা
বন্ধু বান্ধবের কাছে থেকে সহজে যোগাযোগ করে সমাধান করে নিতে পারি। স্কুল কলেজের
বা কোন প্রজেক্টের কাজের জন্য ভিডিও কলের মাধ্যমে সব বন্ধুরা মিলে গ্রুপ ডিসকাশন
করে সহজে কাজটি করতে পারি।
যোগাযোগের জন্য বর্তমানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ই মেইল এর মাধ্যমে
ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন নোটিফিকেশন দিয়ে থাকে। নতুন নতুন কোন আপডেট তথ্য পেতে
সেটা শিক্ষা ক্ষেত্রে হতে পারে অথবা স্কুলের সময় রুটিন ইত্যাদি পরিবর্তন হলে
সহজে শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের জানিয়ে দিতে পারে। ছাত্র-ছাত্রীদের যেকোনো সমস্যা
সমাধানে সহজে শিক্ষকদের সাথে অডিও বা ভিডিও ফলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে সমাধান করে
নিতে পারে। পরীক্ষার প্রিপারেশন নিতে যেকোনো যোগাযোগে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে
পারি।
এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না যেতে পারলে আমরা আমাদের শিক্ষক অথবা বন্ধু
বান্ধবের কাছে থেকে সহজে পড়া এবং বাড়ির কাজগুলো জেনে নিতে পারি।পরীক্ষায় কোন
রেজাল্ট দিলে সহজে আমরা একে অপরের সাথে অডিও বা ভিডিও কলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে
নিতে পারি । এছাড়াও আমরা যারা দূরে বাহিরে পড়াশোনা করি তারা যেকোনো
সমস্যায় সহজে পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারি এতে আমাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান
সহজে করে ফেলতে পারি।
অর্থ উপার্জন করতে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা
আমাদের ছাত্র জীবনে লেখাপড়া করতে অনেক খরচ হয় অনেক সময় অর্থের অভাবে আমাদের
লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় আমরা মোবাইলের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে লেখাপড়ার খরচ
নিজে বহন করে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারি এতে পরিবারের চাপ কমে যায়। আমরা
মোবাইলে অনলাইনে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে পারি যেমন upwork, fiver,
freelancer ইত্যাদি অ্যাপস থেকে সহজে মোবাইল দিয়ে অনলাইনে মাধ্যমে ইনকাম করতে
পারি।
এছাড়াও আমরা অনলাইনে টিউশনি করাতে পারি এটা আমাদের লেখাপড়া সহ পারিপার্শ্বিক
খরচ বহন করতে সাহায্য করে। এছাড়া আমরা বিভিন্ন ব্যান্ড দারাজ এবং এমাজন এছাড়া ও
অন্যান্য কোম্পানির লিংক নিয়ে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সহজে মোবাইলে
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে অর্থ উপার্জন করতে পারি। এছাড়াও আমরা যেগুলো
প্রতিনিয়ত শিখে থাকি এসব শিক্ষামূলক বিষয় নিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকম
ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করতে পারি ।
ভিডিও কনটেন্টের চাহিদা আজকাল অনেক বেশি এর মাধ্যমে আমার ভালো অর্থ উপার্জন করতে
পারি। এছাড়াও মোবাইল ফোনে বিভিন্ন অ্যাপের মাধ্যমে কুইজ খেলে আমার অর্থ উপার্জন
করতে পারি। ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা এর মধ্য একটি হলো মোবাইল ব্যবহার
করে আমার সহজে অর্থ উপার্জন করে নিজে স্বাবলম্বী হতে পারি। ছাত্র জীবনে লক্ষ্য
পৌঁছাতে হলে আমাদের মোবাইলের অপব্যবহার না করে সঠিক ব্যবহার করতে হবে।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সম্পর্কে আপনাদের কাছে বিস্তারিত আলোচনা করব।
মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার একদিকে যেমন আমাদের জীবন উজ্জল খুব সুন্দর করে তুলে আর
একদিকে মোবাইল ফোনের অপব্যবহারে ছাত্র জীবনকে নষ্ট করে দেয় সাথে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ
অন্ধকার করে দেয়। মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের পড়াশোনার মনোযোগ নষ্ট
হয়ে যায় এবং পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি।
মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের স্বাস্থ্যের উপর অনেক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ শারীরিক ও মানসিকভাবে চাপে পড়ে যায়।
ছাত্র জীবনে অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার আমাদের মস্তিষ্ককে আসক্ত করে ফেলে যা
আমাদের পরবর্তী সময়ে অন্ধকারের দিকে ফেলে দেয়। অনেক সময় আমরা বিভিন্ন ভিডিও
দেখে থাকি যা আমাদের আচরণগত পরিবর্তন করে। অনেক ভিডিও আছে যা দেখার ফলে আমাদের
মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।
কিছু নোংড়া ভিডিও আছে যেগুলা দেখার ফলে আমাদের চরিত্র নষ্ট হতে থাকে। এমন কিছু
ভিডিও আছে যা দেখে মানুষ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এরকম মারাত্মক অসামাজিক কাজকর্ম
শিখে থাকে যা আমাদের সমাজকে অন্ধকারের দিকে টেনে নিয়ে যায় অতিরিক্ত মোবাইল
ফোনের ব্যবহার আমাদের আত্মীয়তার বন্ধন নষ্ট করে দেয় আমাদের একলা করে দেয়।
এমনকি অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার আমাদের মৃত্যু পর্যন্ত ডেকে আনতে পারে।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের শারীরিক প্রভাব
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের শারীরিক প্রভাব অনেক সময় আমাদের স্বাস্থ্যর অনেক ক্ষতি
করে। আমরা অতিরিক্ত মোবাইলে ফোন ব্যবহারের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ি যা আমাদের ছাত্র
জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা আমাদের শারীরিক ভাবে আমাদের দেহে ক্ষতিকর প্রভাব
ফেলে। আমাদের ছাত্র জীবনে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে আমাদের শরীরে
বিভিন্ন যে শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
চোখের সমস্যা : অতিরিক্ত মাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে মোবাইল যে
ক্ষতিকর ব্লু রশি রয়েছে তা আমাদের চোখে পড়ে চোখের রেটিনা নষ্ট করে দেয়।
এছাড়াও মোবাইল ফোন ব্যবহারের সময় আমরা মোবাইলের দিকে একটানা তাকিয়ে থাকি এতে
আমাদের চোখে ব্যথা সৃষ্টি হয় এবং মাঝেমধ্যে চোখ দিয়ে পানিও ঝরে। মোবাইল ফোনের
দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমরা অনেক চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করি এবং অনেক সময়
সময় দূরের দূরের জিনিস দেখতে পায় না।
মাথাব্যথা ও ঘাড়ে ব্যথা সৃষ্টি হয় : মোবাইল ফোনের দিকে আমার যখন
দীর্ঘক্ষণ সময় নিয়ে তাকিয়ে থাকি তখন আমাদের মাথা ব্যাথা করে। কারন মোবাইল ফোনের
ব্লু আলো আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুর উপরে বিরুপ প্রভাব ফেলে। অনেক সময় আমরা
উচ্চস্বরে সাউন্ড দিয়ে মোবাইলে বিভিন্ন রকম ভিডিও দেখে থাকি এতে আমাদের মাথা
ব্যথা সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও আমরা মোবাইলের দিকে একভাবে নিচু হয়ে তাকিয়ে থাকলে
আমাদের মাথা ও ঘাড়ের রগ টেনে ধরে এবং ঘাড় ও মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা সৃষ্টি হয়।
পিঠে ও কাঁধে ব্যথা : আমরা যখন আমাদের মোবাইলের দিকে অনেক সময় ধরে নিচু
হয়ে তাকিয়ে থাকতে হয়। এতে কাধে এবং পিঠের মেরুদন্ডে চাপ সৃষ্টি হয়। বিভিন্ন
সময় কাঁধের মাংসপেশিতে টান লাগে এবং কাধে প্রচন্ড ব্যথা সৃষ্টি হয়। একভাবে ভাবে
বসে থাকার কারণে পিঠে ব্যথা অনুভব হয় এবং পিঠের মাংসপেশিগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে ।
এভাবে বসে থাকায় পিঠে মেরুদন্ডে প্রচন্ড চাপ পড়ে অনেক সময় মেরুদন্ড বাঁকা হয়ে
যায়।
আঙ্গুলে ব্যথা ও হাতের কবজি ব্যথা হয় : মোবাইল ফোন সাধারণত আমরা সব সময়
আমাদের দুই হাত দিয়ে ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু অতিরিক্ত ব্যবহারে ফলে আমাদের
হাতের আঙ্গুলগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে মাংসপেশিতে টান অনুভব করে হাতের আঙ্গুলগুলো
এবং হাতের কব্জিতে ব্যথা করে। আমরা যখন মোবাইল ফোন হাতে ধরে থাকি তখন মোবাইলে চাপ
আমাদের হাতের আঙ্গুল এবং এবং কব্জির উপর পড়ে। মাঝে মধ্য হাতের আঙ্গুল গুলো ঝিন
ঝিন করে এবং অবশ হয়ে আসে।
স্থুলতা বৃদ্ধি পায় : আমাদের মধ্য অনেকে দিনের বেশিরভাগ সময় মোবাইলের
পেছনে ব্যয় করে থাকে। বেশিক্ষণ সময় বসে থাকার কারণে আমাদের শরীরের ক্যালোরির
ক্ষয় হয় না এতে অতিরিক্ত ক্যালোরি পেটে জমে আমাদের পেটে চর্বি সৃষ্টি করে এবং
স্থলতা বৃদ্ধি পায়। পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমে যাওয়ার কারণে বিভিন্ন ধরনের অসুখ
বিসুখ সৃষ্টি হয়। এমনকি শরীরের রক্তের সাথে চর্বি মিশে শরীরের রক্তের
হিমোগ্লোবিন কে কমিয়ে দেয় এবং আমাদের হার্টের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের মানসিক প্রভাব
মনোযোগের অভাব : বর্তমানে ইন্টারনেট দুনিয়াতে মোবাইল ফোনের সোশ্যাল
মিডিয়াতে সবাই কম বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছে । ছাত্র-ছাত্রীরা মোবাইল ফোনে তাদের
বেশিরভাগ সময় ব্যয় করছে। সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন চ্যানেল যেমন ইউটিউব এবং
ফেসবুকে বিভিন্ন রকম ভিডিও বিভিন্ন রকম তথ্য পেতে তারা তাদের দিনের বেশিরভাগ সময়
মোবাইলের সোশ্যাল মিডিয়াতে কাটাচ্ছে। ফলে তারা তাদের লেখাপড়ায় মনোযোগ হারিয়ে
ফেলছে তাদের মধ্যে লেখাপড়া কোন চাহিদা দেখা যায় না।
নিদ্রাহীনতা ও মানসিক ক্লান্তি : মোবাইল ফোন একভাবে দীর্ঘক্ষণ সময় ধরে
ব্যবহারের কারণে আমাদের শরিরে বিভিন্ন রকম সাইড ইফেক্ট পড়ে। আমরা অনেক সময় এক
জায়গায় বসে দীর্ঘক্ষণ সময় অনেক রাত পর্যন্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। এতে
আমাদের পার্যাপ্ত ঘুমের অভাব পড়ে যায় এবং আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষ গুলো
দুর্বল হয়ে পড়ে। আমাদের বিভিন্ন সময় ঘুমের অভাবের কারনে মস্তিষ্কের ভারসাম্য
হারিয়ে মানসিকভাবে ক্লান্ত হয়ে পড়ি।
মেজাজ খিটখিটে হওয়া : ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে
ছাত্ররা মোবাইলের প্রতি অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়ে। এবং দিনের বেশিরভাগ সময়
মোবাইলের সাথে কাটাতে ভালোবাসে। মোবাইল ফোন মানুষের সাথে মানুষের যে বন্ধন সেটি
নষ্ট করে দেয়।মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফলে একলা থাকতে থাকতে মেজাজ খিটখিটে হয়ে
পড়ে এবং মোবাইল ছাড়া একটি মুহূর্ত থাকতে পারে না । ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের
অপকারিতা ছাত্রদের মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন করে তোলে।
সৃজনশীলতার ঘাটতি : ছাত্র জীবনে সৃজনশীলতা না থাকলে ভালোভাবে সফল হওয়া
যায় না। এজন্য আমাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে হয় এবং পড়াশোনায় বেশি
মনোযোগ তৈরি করতে হয়। কিন্তু মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট সংযোগ হওয়াতে আমরা নিজের
ভেতরের সৃজনশীলতা হারিয়ে ফেলেছে। কোন কিছু জানার প্রয়োজন হলে মোবাইল থেকে জেনে
নিচ্ছি কিন্তু নিজের যে মেধা বিকাশের সৃজনশীলতা প্রয়োগ করছি না ফলে আমাদের
ভেতরের সৃজনশীলতা হারিয়ে যাচ্ছে।
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের নেতিবাচক দিক
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের যেমন সুবিধা এবং ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে ঠিক তেমনি
নেতিবাচক প্রভাব রয়েছে। আগে মোবাইল ফোন মানুষ শুধু কথা বলার জন্য ব্যবহার করতো
কিন্তু বর্তমানে মানুষ সোশাল মিডিয়ার ক্ষেত্রে ফোন বেশি ব্যবহার করতে আগ্রহী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় যাওয়ার ফলে বিভিন্ন রকম ভিডিও দেখে কিছু ভিডিও ছাত্রদের জীবনে
উপকারিতা এনে দেয় এবং কিছু ভিডিও জীবনকে নষ্ট করে দেয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন রকম অসামাজিক ভিডিও ছাড়ে যেগুলো দেখে ছাত্রদের উপর কু
প্রভাব সৃষ্টি করে। এবং কিছু কিছু ভিডিও আছে যেইগুলা দেখার ফলে ছাত্রদের চরিত্র
নষ্ট হয়ে যায়। এবং বিভিন্ন ভিডিও দেখে তারা খারাপ চরিত্রের দিকে ধাবিত হয়। গভীর
রাতে তারা অনেক সময় বসে থেকে বিভিন্ন রকম খারাপ ভিডিও দেখে এতে তাদের মস্তিষ্কের
উপর খারাপ মানসিক প্রভাব পড়ে। এতে করে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা এবং যৌবন শক্তি
নষ্ট হয়ে যায় ।
অনেক সময় মানসিক ভাবনা চিন্তার পরিবর্তন ঘটে। অনেক সময় এরকম ভিডিও দেখে অল্প
বয়সে ছেলেমেয়েরা বিয়ে করতে আগ্রহী হয়। নারীরা বিভিন্ন শিকারের হয়রানি
হয়।সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন রকম মিথ্যা তথ্য প্রকাশিত করে যা ছাত্ররা সঠিক
ভেবে তাদের জীবনে প্রয়োগ করে এতে জীবনে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। বর্তমানে
একজন আরেকজনের পার্সোনাল তথ্য চুরি করে নেয়। এছাড়াও অনেক সময় মানুষের পার্সোনাল
ভিডিও নিয়ে মানুষকে হ্যাক করে থাকে এবং মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
ছাত্রদের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দেয় মোবাইল ফোন
অতিরিক্ত মোবাইল এর ব্যবহার আমাদের সামনের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দেয়।
অতিরিক্ত রাত জেগে মোবাইল দেখার পরে এর প্রভাব দিয়ে আমাদের মস্তিষ্কে পড়ে।
দীর্ঘক্ষণ মোবাইল ব্যবহার করার কারণে আমাদের একদিকে তাকিয়ে থাকতে হয় এর ফলে
আমাদের চোখে চাপ সৃষ্টি হয় এবং চোখ ব্যথা হয় এবং চোখে ঝাপসা দেখা যায়। অনেক
সময় আমরা বইয়ের ছোট ছোট লেখাগুলো দেখতে পাই না এতে আমাদের বই পড়তে অসুবিধা হয়
অনেক সময় দূরের জিনিস দেখতে অসুবিধা হয়।
আমরা অনেক সময় বোর্ডের লেখা দেখতে পায় না। এটা আমাদের পড়ালেখা জন্য অত্যন্ত
ভয়াবহ ও ক্ষতিকর। অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার কারণে আমাদের লেখাপড়ার প্রতি
মনোযোগ থাকে না এবং আমরা পড়াশোনার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। মোবাইল ফোন আমাদের
মস্তিষ্কের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। পড়ালেখা করে আমার মনে করে রাখতে পারিনা।
মোবাইল ব্যবহার করার কারণে আমরা ঠিকমতো পড়াশোনা করি না এতে আমাদের পরীক্ষার
রেজাল্ট খারাপ হয়।
ছাত্রজীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা হলো মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার যা ছাত্রদের
বর্তমান জীবন এবং ভবিষ্যৎ জীবন অন্ধকারের দিকে টেনে নিয়ে যায়।মোবাইলের ব্যবহার
আমাদের একঘেয়েমি করে তোলে একলা জীবন উপভোগ করতে শেখায়। এতে পারিবারিক বন্ধন
নষ্ট হতে থাকে। আমরা অনেক সময় পরিবার থেকে আলাদা থাকার কারণে পরিবারের ভালোবাসা
থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এভাবে পরিবারের বন্ধন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনের
অপব্যবহারের ছাত্র জীবন নষ্ট হয়ে যায়।
মোবাইল ব্যবহারে আসক্তির কারণ
মোবাইল ব্যবহারে আসক্তির কারণ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে একেকজন আসক্ত হয় একেকটি
বিষয়য়ের উপর। কেউ অনলাইনে গেম খেলতে ভালবাসে। অনলাইনে বিভিন্ন রকম গেম খেলা যায়
এবং গেম খেলতে খেলতে গেমের প্রতি প্রচন্ড আসক্ত হয়ে পড়ে। এখন দীর্ঘক্ষণ ধরে
অনলাইনে গেম খেলা করার প্রভাবে ছাত্ররা তাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে তাদের
লেখাপড়ার সময় নষ্ট করে। কেউ আছে ভিডিও, সিনেমা নাটক দেখতে ভালোবাসে।
সারাদিন মোবাইলে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা নাটক সিনেমা দেখে তাদের সময় পার করে
দেয়।এতে পরবর্তীতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বর্তমানে টিকটক ভিডিও
প্রচন্ড জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সময় এইসব ভিডিও দেখে তাদের তাদের
মূল্যবান সময় অপচয় করে। ফেসবুক প্ল্যাটফর্ম অনেক বড় প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকে
ব্যবহার করে না এরকম লোকের সংখ্যা খুবই কম। মানুষের ফোনে ফেসবুকে বেশি সময়
ব্যবহার করে থাকে।
মোবাইল ফোনের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে এবং ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়া থেকে
পিছিয়ে যাচ্ছে। তারা তাদের সামনের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে না। ইন্টারনেটের
লোভনিয় চাকচিক্য আসক্তির মোহনাই পড়ে তারা তাদের বাবা মা এর সপ্ন নিজেদের উজ্জল
ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে আর এইভাবে ছাত্র ছাত্রী মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে।
বর্তমানে ছোটকাল থেকে শিশু বাচ্চারা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে আসছে এবং মোবাইলে
ক্ষতিকর প্রভাব তাদের উপর পড়ছে।
কিভাবে শিক্ষার্থীরা মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমাতে পারে
ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের অপকারিতা সরিয়ে জীবনকে উপকারের দিকে ধাবিত করতে হবে
এজন্য আমাদের কিছু নিয়ম পরিবর্তন করতে হবে। আমরা আমাদের মোবাইল ব্যবহারের একটি
সঠিক সিডিউল তৈরি করে নেব কখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করা উচিত শুধু সেই সময় টুকু
মোবাইল ফোনের সাথে সময় দেব। এবং আমরা আমাদের বাকি সময় বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করব
যা আমাদের যা আমাদের শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ রাখবে।
আমরা এ সময় বিভিন্ন রকম বই পড়তে পারি যা আমাদের জ্ঞান অন্বেষণ করতে সাহায্য
করবে। এছাড়াও এ সময় আমরা পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় ব্যয় করতে পারি এবং
বিভিন্ন কাজে পরিবারের লোকদের সহযোগিতা করতে পারি। এতে পরিবারের সবাই খুশি হবে
এবং পরিবারের কারো উপর কাজের চাপ বেশি হবে না। আমরাও মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে
বেরিয়ে আসতে পারবো। এবং সামাজিক পরিবেশে গড়ে উঠতে পারবো।
আমরা বিকেলের দিকে পরিবারের লোকদের সাথে নিয়ে বেড়াতে যেতে পারি এতে
আমাদের বাহিরের প্রাকৃতিক আলো বাতাস আমাদের শরীরকে সুন্দর ও সুস্থ রাখবে।
এতে আমাদের পরিবারের বন্ধন ও একতা থাকবে ।আমরা সকালে উঠে নিয়মিত বিভিন্ন রকম
ব্যায়াম করতে পারি যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। আমাদের শরীর সুস্থ
রাখতে ব্যায়ামের উপকারিতার জুড়ি নেই।
এছাড়া আমরা বিভিন্ন রকম খেলাধুলা করতে পারি যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি।
এবং আমরা নিয়মিত পরিমান করে ঘুমাবো। আমরা যখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করব মোবাইল
ফোনের বিভিন্ন খারাপ অ্যাপসগুলো ডিলিট করে দেব যাতে আমরা খারাপ বিষয়ের প্রতি
আসক্ত না হয়ে পড়ি। মোবাইল ফোনে সব সময় জ্ঞান অন্বেষণ করা যায় এমন জিনিস দেখব
। এভাবে মোবাইল ফোনের ব্যবহার কমাতে পারি।
শেষকথা : ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা ও অপকারিতা
একদিকে যেমন ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের উপকারিতা রয়েছে তেমন অন্যদিকে রয়েছে
মোবাইলের ফোনের অপকারিতা। মোবাইল ফোন মুলত মানুষের উপকারে সঠিক ব্যবহারের জন্য
তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকে মোবাইলের সঠিক ব্যবহার না করে অপব্যবহার করে
থাকি। আমরা যদি মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার করতে পারি তাহলে আমাদের ছাত্র
জীবনে অনেক সুবিধা ভোগ করতে পারবো যা আমাদের ছাত্র জীবনে উজ্জল ভবিষ্যৎ গড়ে
তুলতে সাহায্য করবে।
আশাকরি পুরো আর্টিকেল টি যদি পড়ে থাকেন তাহলে ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের
উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। এখন আপনার সঠিক সিধান্ত কি মোবাইল
এর সঠিক ব্যবহার করবেন নাকি অপব্যবহার করবেন । আশাকরি ছাত্র জীবনে মোবাইল ফোনের
সঠিক ব্যবহার করবেন।
আমি আপনার নিয়মিত ভিজিটর আপনার লেখাগুলো ভালো লাগে খুবই উপকৃত হলাম আর্টিকেলটি পড়ে |💝