রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায়
রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায় আপনারা জানতে চান ? তাহলে আপনারা একদম সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব কীভাবে সহজে স্বাভাবিক ভাবে রোগা থেকে মোটা হওয়া যায়।রোগা থেকে মোটা হওয়ার জন্য কোন খাবার গুলো আমাদের নিয়মিত খাওয়া উচিত।
আরো জানতে পারবেন মোটা না হওয়ার কারন কি এবং কি করলে মোটা হতে পারবেন। এছাড়াও আরো থাকছে মোটা হওয়ার জন্য পার্যাপ্ত ঘুম ও ব্যায়ামের গুরুত্ব। সম্পূর্ণ তথ্য জানতে আমাদের সাথে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত থাকুন।
সুচিপত্র : রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায়
- রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায়
- সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
- অতি তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার উপায়
- মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা
- মোটা হওয়ার ব্যায়াম
- ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়
- কোন ফল খেলে ওজন বাড়ে
- কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে
- মোটা না হওয়ার কারন কি
- শেষ কথাঃরোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায়
-
রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায়
রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায় জানতে চান এর জন্য আপনাকে কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হবে।অনেকে আছেন অতিরিক্ত রোগা তারা মোটা হতে চান মোটা হতে হলে আমাদের কিছু নিয়ম নীতি মেনে পুষ্টিকর প্রোটিন ও ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতে হবে। রোগা থেকে মোটা হওয়ার জন্য অনেকে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি জাতীয় খাবার,ফাস্টফুড এবং ফ্যাট জাতীয় অতিরিক্ত খাবার খেয়ে থাকেন কিন্তু আসলে এগুলা খাবার আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতিকর।
ফাস্টফুড এবং ফ্যাটি জাতীয় খাবার আমাদের শরীরকে মোটা করলেও শরীরে অতিরিক্ত চর্বি তৈরি করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত করে। এছাড়াও পেটে অতিরিক্ত চর্বি জমলে পেট মোটা হয়ে যেতে থাকে দেখতেও ভালো লাগে না।এইজন্য রোগা থেকে মোটা হওয়ার জন্য আপনার খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেট শর্করা, প্রোটিন, আইরন, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এবং প্রাকৃতিক ফ্যাট জাতীয় খাবার প্রতিদিনের তালিকা রাখুন। যেমন : দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, রুটি, কলা, খেজুর, বাদাম, টক দই এবং বিভিন্ন রকমের সবজি।
সকল পুষ্টিকর খাবারে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ক্যালোরি অন্যান্য উপাদান গুলো পাওয়া যায়। পুষ্টিকর খাবার আমাদের শরীরকে স্বাভাবিক ভাবে মোটা করতে সাহায্য করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও খাবারের পাশাপাশি আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত এবং পরিমাণ মতো ঘুমাতে হবে। আমাদের দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে পাশাপাশি মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হবে তাহলে আমরা সহজে স্বাভাবিকভাবে রোগা থেকে মোটা হতে পারবো।
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায়
সকালে খালি পেটে কি খেলে মোটা হওয়া যায় তা হয়তো আমাদের অনেকের জানা নেই। আমাদের শরীরকে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে মোটা করার জন্য আমাদের বয়স অনুযায়ী সঠিক খাবার গ্রহণ করতে হবে। আমরা অনেকে ভাবি বেশি বেশি খাবার খেলে এবং চর্বি জাতীয় যুক্ত খাবার খেলে মনে হয় শুধু মোটা হওয়া যায় এই ধারণাটা আমাদের একদম ভুল। আমাদের শরীরকে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে মোটা করার জন্য অবশ্যই সকালের নাস্তাই প্রতিদিন প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত।
সকালে দিনের শুরু থেকে আমাদের পরিশ্রম শুরু করতে হয় এজন্য আমাদের সকালের দিকে শরীরে বেশি শক্তির প্রয়োজন হয়। সঠিক সমৃদ্ধ পুষ্টিকর খাবার না খেলে আমাদের শরীর আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে পড়বে এবং আস্তে আস্তে আমাদের শরীর শুকায়ে যেতে থাকবে। এর জন্য আমাদের বয়স এবং আমার কি রকম দিনে পরিশ্রম করি এছাড়াও আমাদের দিনে কি পরিমাণে ক্যালোরি খরছ হয় সে অনুযায়ী আমাদের পরিমাপ করে নিয়মিত পুস্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।
অতি তাড়াতাড়ি মোটা হওয়ার উপায়
- পুষ্টিকর ও ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া : আমাদের শরীরকে দ্রুত মোটা করতে চাইলে আমাদের নিয়মিত পুষ্টি সমৃদ্ধ ও ক্যালোরি যুক্ত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আমরা আমাদের খাবারের তালিকায় নিয়মিত ডিম দুধ মাছ মাংস ডাল কলা খেজুর রুটি ইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার রাখতে পারি। এ সকল খাদ্যে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম ও প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে থাকে যা আমাদের হাড় মজবুত করে ও স্বাস্থ্য বাড়াতে সাহায্য করে এছাড়াও এতে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
- প্রতিদিন নিয়মিত খাবার খাওয়া : আমাদের শরীরকে অতি দ্রুত মোটা করতে চাইলে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে আমাদের নিয়মিত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। আমরা কখনো একসাথে অতিরিক্ত খাবার খাব না এতে আমাদের স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয় হজমের সমস্যা হয়,বমি হতে পারে এবং পেটে চর্বি জমে এছাড়াও অনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়। আমাদের নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন পুষ্টি যুক্ত খাবার বিভিন্ন সময়ে অল্প অল্প করে সকালের নাস্তায়, দুপুরের খাবারে, বিকেলে নাস্তায় এবং রাতের খাবারে ভাগ করে খেতে পারি।
- প্রতিদিন ওয়ার্কআউট বা ব্যায়াম করা : আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং তাড়াতাড়ি মোটা হতে চাইলে আমাদের প্রতিদিন নিয়মিত সকালে ব্যায়াম করা উচিত। অনেকে ভাবেন মোটা হতে চাইলে ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই এই ধরনাটি ভুল। নিয়মিত ব্যায়াম করলে খাদ্য হজম শক্তি বাড়ে এবং আমাদের শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট ভেঙ্গে ফেলে ফলে আমাদের শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমতে পারে না। আমাদের প্রতিদিন সকালে নিয়মিত ৪০ মিনিট ব্যায়াম করা উচিত। এতে আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় এবং হার্ট সুস্থ থাকে।
- খাবারের সাথে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট যোগ করা : আমরা জানি ফ্যাট জাতীয় খাবার আমাদের শরীরকে অতি দ্রুত মোটা করতে সাহায্য করে এজন্য আমাদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় স্বাস্থ্যকর ফ্যাট জাতীয় খাবার রাখা প্রয়োজন যেমন : অলিভ অয়েল, আমন্ড অয়েল, ঘি বিভিন্ন রকম বাদাম এবং টক দই খাওয়া উচিত। এগুলা খাবারের মধ্যে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট থাকে আমাদের শরীরেকে অতি দ্রুত মোটা করতে সাহায্য করে। এবং শরীরের বিভিন্ন পুষ্টির যোগান দেয়। কিন্তু আমরা বাহিরের অস্বাস্থ্যকর ফ্যাটজাতীয় খাদ্য থেকে দূরে থাকবো।
- নিয়মিত পানি পান এবং পার্যাপ্ত ঘুম : স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত দৈনিক কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করা উচিত। পানি আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে এবং স্বাস্থ্যকর ভাবে শরীরকে মোটা করতে সাহায্য করে। এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে দৈনিক সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানো উচিত। নিয়মিত পরিমাণে ঘুম আমাদের মানসিক চাপ কমায় এবং শরীরের বিভিন্ন হরমোনের কাজগুলো সক্রিয়ভাবে চলতে থাকে এবং শরীরকে স্বাভাবিক ভাবে মোটা করতে সাহায্য করে।
মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকা
আমাদের মোটা হওয়ার জন্য প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পুস্টি সমৃদ্ধ খাবার রাখা উচিত। পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্য যে সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি,প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম বেশি থাকে সেগুলো খাবার আমাদের খাদ্য তালিকায় নিয়মিত রাখা উচিত। এই সকল খাবার আমাদের শরীরের পুষ্টির অভাব পূরণ করে পাশাপাশি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখে এবং স্বাভাবিকভাবে মোটা হতে সাহায্য করে। রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায় হিসেবে এই খাদ্য তালিকা অনুযায়ী নিয়মিত খাবার খেতে পারেন।
খাবারের সময় | খাবারের তালিকা |
খাবারের পুষ্টিগুন |
---|---|---|
সকালের নাস্তা | সিদ্ধ ডিম,দুধ,কলা,রুটি ও মধু | প্রচুর পরিমান ক্যলোরি,ফাইবার ও প্রোটিন ,ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় |
দুপুরের খাবার | মাছ,মাংস,ডাল,ভাত,টকদয় | আমিষ,প্রোটিন,শর্করা |
বিকালের নাস্তা | বাদাম,ফল,কিসমিস | ক্যালসিয়াম ,ক্যালোরি,বিভিন্ন ভিটামিন |
রাতের খাবার | রুটি,সবজি,ডাল ও বিভিন্ন সালাত | শর্করা,ভিটামিন,প্রোটিন থাকে |
মোটা হওয়ার ব্যায়াম
মোটা হওয়ার ব্যায়াম সম্পর্কে হয়তো আমাদের অনেকের জানা নেই আমরা অনেকেই মনে করে থাকি শুধু ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম করা উচিত এটা একদম ঠিক নয়। শরীরকে মোটা করার জন্য পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়ার পাশাপাশি ব্যায়ামের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।অনেক ব্যায়াম রয়েছে এ সকল ব্যায়াম আপনি নিয়মিত বললে আপনার মাংসপেশি মোটা হতে থাকবে। যেসব ব্যক্তি রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায় খুজতেছেন তাদের জন্য নিচের সকল ব্যায়াম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- শক্তি বা ওজন উত্তোলন ব্যায়াম : আমাদের এমন ব্যায়াম করা উচিত যা আমাদের মাংসপেশি বাড়াতে সাহায্য করবে। এজন্য আমরা নিয়মিত ডাম্বল বা মার্বেল উত্তলন করতে পারি। প্রথমত শরীরের ওজনের সাথে খাপ খাইয়ে একটি মার্বেল হাতে নিয়ে প্রথমের দিকে কয়েকবার উঠানামা করুন দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার শরীরের হাতের এবং বুকের মাংসপেশি বাড়ছে। শরীরের পেশি যত বাড়বে শরীরের ভেতরে তত বেশি ক্যালোরি সঞ্চিত হবে এবং আপনি আস্তে আস্তে মোট হতে পারবেন।
- স্কোয়াট ব্যায়াম : শরীরের মাংসপেশি বাড়াতে স্কোয়াট ব্যায়াম অনেক কার্যকরী। স্কোয়াট ব্যায়ামটি করার জন্য প্রথমত আপনাকে সোজা হয়ে দাড়াতে হবে। এবং হাত টি কোমরে রেখে আপনাকে ওঠাবসা করতে হবে। এই ব্যায়াম পা এবং কোমরে চাপ বেশি রাখে আপনি এই ব্যায়াম প্রথমের দিকে অল্প করে করতে পারেন। তারপরে আস্তে আস্তে বাড়াতে থাকবেন কিছু দিন পরে দেখতে পাবেন আপনার পায়ের মাংস পেশি বাড়ছ। এই ব্যায়াম নিয়মিত করার ফলে আপনার ওজন স্বাভাবিক ভাবে বাড়তে থাকবে।
- পুশ আপ ব্যায়াম : আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত। পুশ আপ ব্যায়াম নিয়মিত করলে আমাদের হাত এবং কাধের মাংস পেশি বৃদ্ধি পায়। পুশ আপ ব্যায়াম করার জন্য প্রথমত আমাদের দুই হাত মাটির দিকে কাধ বরাবর রাখা উচিত। এবং প্রতিবার হাতের উপর ভর দিয়ে সারা শরীর নিচের দিকে নামতে হবে আবার পুনরায় সারা শরীর হাতের উপর ভর দিয়ে উপরে তুলতে হবে। এতে সারা শরীরে চাপ প্রয়োগ হবে এবং মাংস পেশি গুলো আস্তে আস্তে বাড়তে থাকবে।
- পুল আপস ব্যায়াম : আমরা যদি রোগা থেকে মোটা হতে চায় তাহলে আমাদের যেমন পুস্টিকর খাবার প্রয়োজন ঠিক তেমন খাবারের পাশাপাশি শীরর সুস্থ রাখতে এবং মোটা হওয়ার জন্য আমরা নিয়মিত পুল আপস ব্যায়াম করতে পারি।পুল আপস ব্যায়াম করার জন্য আমাদের একটি বার বা বাস ঝুলিয়ে নিতে হবে। এবং এখানে বারটি দুই হাত দিয়ে ধরে পুরো শরীর উপরের দিকে তুলতে হবে আবার নিচের দিকে নামিয়ে আনতে হবে। এই ভাবে বার বার উঠানামা করাতে হবে।
ব্যায়াম করার সময় আমাদের খেয়াল রাখতে হবে আমাদের অতিরিক্ত ব্যায়াম করা যাবে না। অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে আমাদের শরীরের চর্বি গুলো বেশি ভেঙ্গে যেতে পারে এতে আমাদের শরীরের মাংস পেশি বাড়ার পরিবর্তে কমে আরো কমে যেতে পারে। ব্যায়াম করার পরে অবশ্যই আমাদের পুস্টিকর খাবার খেতে হবে যাতে শরীরের ক্যালরি গুলো পুরোন হয়ে যায়। এই ভাবে আমরা আমাদের শরীরের ওজন বাড়াতে পারি।
ইসলামে মোটা হওয়ার উপায়
আমাদের মধ্যে অনেকে মানুষ আছেন যারা অনেক রোগা পাতলা। এই সকল মানুষ গুলো প্রতিনিয়ত খুঁজে বেড়ায় কিভাবে রোগা পাতলা থেকে স্বাভাবিক ভাবে মোটা হওয়া যায়। এই সময় আমরা বিভিন্ন রকমের মোটা হওয়ার ওষুধ খেয়ে থাকি এবং বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করি। এতে কোনো ভালো ফলাফল পাওয়া যায় না। মোটা হতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। খাবারের পাশাপাশি আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে ব্যায়াম অবশ্যই প্রয়োজন।
হাদিসে বর্ণিত আছে মোটা হওয়ার জন্য আমরা খাবার হিসেবে শসা ও খেজুর একসাথে মিক্স করে খেতে পারি।শশা এবং খেজুর দুটোই আমাদের স্বাস্থ্য জন্য অনেক উপকারী। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ম্যাগনেসিয়াম, ফাইবার থাকে এবং শসাতে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেল, ফাইবার যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। একবার মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহ মোটা হতে চেয়েছিলেন তখন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাহু সালাম মা আয়েশা রাদিয়াল্লাহু কে শসা এবং খেজুর একসাথে খাওয়ার কথা বলেছিলাম।
কোন ফল খেলে ওজন বাড়ে
কোন ফল খেলে ওজন বাড়ে অনেকে জানতে চান এখানে আমাদের শরীরের ওজন বাড়াতে চাইলে আমাদের নিয়মিত পুষ্টি সমৃদ্ধ ফল খাওয়া উচিত। ফলের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন রকম ভিটামিন, মিনারেল, আয়রন, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের অন্যান্য পুষ্টির অভাব পূরণ করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। তাই আমাদের নিয়মিত বিভিন্ন রকমের ফল খাওয়া উচিত।
- কলা ফল : ওজন বাড়াতে চাইলে আমাদের নিয়মিত কলা খাওয়া উচিত। কলা আমাদের দ্রুত ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। কলাতে রয়েছে ভিটামিন মিনারেল এছাড়াও প্রতি ১০০ গ্রাম কলায় ৮৯ ক্যালরি পাওয়া যায়।কলাতে রয়েছে ভিটামিন বি ৬ যা আমাদের শরীরে প্রোটিন সরবরাহ করে থাকে এবং ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পটাশিয়াম নিয়ন্ত্রণ করে এবং ফাইবার খাদ্য হাজম শক্তি করতে সহায়তা করে। কলা খেলে পেট ভরে থাকে এবং শরীরে এনার্জি পাওয়া যায়।
- খেজুর ফল : শরীরের ওজন বৃদ্ধি করতে খেজুরের উপকারিতা অনেক। প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুর থেকে ২৯০ ক্যালোরি পাওয়া যায় এছাড়াও খেজুর আমাদের শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। খেজুরের মধ্যে রয়েছে ফাইবার উপাদান যা আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। খেজুরের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন বি মিনারেল যা আমাদের দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।খেজুর, কলা, দুধ সবকিছু একসাথে যদি মিক্সড করে সুপ বানিয়ে খেলে বেশি প্রোটিন পাওয়া যায় এবং দ্রুত ওজন বাড়াতে সাহায্য করে।
- অ্যাভোকাডো ফল : অ্যাভোকাডো ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন ও ক্যালরি যা আমাদের শরীরে দ্রুত এনার্জি বাড়ায় এবং ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও এই ফলের মধ্যে পাওয়া যায় পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রন যা আমাদের রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে। দ্রুত ওজন বাড়াতে অ্যাভোকাডো, দুধ, বাদাম, কলা এইসব ফল একসাথে মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও অ্যাভোকাডো আমরা বিভিন্ন ফলের সাথে সালাত হিসেবে খেতে পারি।
- নারিকেল ফল : নারিকেল আমাদের সকালের এবং বিকেলে নাস্তায় রাখতে পারি। নারিকেলে রয়েছে প্রোটিন ক্যালোরি এবং ফ্যাট জাতীয় উপাদান যা আমাদের শরীরে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও নারিকেল থেকে আমরা দুধ বানিয়ে খেতে পারি নারিকেল দুধে প্রচুর ক্যালরি ও ফ্যাট জাতীয় উপাদান পাওয়া যায়। এছাড়াও বাজারে নারিকেল পাউডার পাওয়া যায় নারিকেল পাউডারের সাথে দুধ মিশিয়ে খেলে তাড়াতাড়ি ওজন বাড়ানো যায়।
কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে
কোন ভিটামিন খেলে ওজন বাড়ে জানতে চান আসলে ভিটামিন সরাসরি খাওয়া যায় না ভিটামিন থাকে খাদ্যের মধ্যে। আমরা যদি আমাদের শরীরের ওজন বাড়াতে চায় তাহলে আমাদের বিভিন্ন ভিটামিন যুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। ওজন বাড়াতে সাহায্য করে এরকম ভিটামিন যুক্ত কয়েকটি খাদ্য তালিকা নিচে দেয়া হল
- ভিটামিন বি কমপ্লেক্স : ভিটামিন বি কমপ্লেক্স সরাসরি ওজন বাড়ায় না এটি বিভিন্ন কার্যক্রম প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আমাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি করার পাশাপাশি ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যুক্ত খাবার যেমন : ডিম, মাংস, বাদাম, দই পনির শাকসবজি ইত্যাদি খাবারে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স পাওয়া যায়। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স যুক্ত খাবার নিয়মিত খাওয়ার ফলে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শরীরের ওজন বৃদ্ধি কত সহায়তা করে।
- ভিটামিন ডি : ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম পাওয়া যায় এবং এটি হাড়ের গঠন মজবুত করতে সাহায্য করে।এছাড়ও ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব পড়লে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়বে এবং আমাদের ওজন কমতে থাকবে। ওজন বাড়াতে ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার যেমন : সামুদ্রিক ফ্যাটি মাছ,ডিমের কুসুম,মাশরুম এবং দুগ্ধ জাতীয় খাবার নিয়মিত খাওয়া উচিত । এই সকল খাবার আমাদের দ্রুত মোটা করতে সাহায্য করে।
- ভিটামিন সি : ভিটামিন সি জাতীয় খাবার আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারি।ভিটামিন সি আমাদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।পাশাপাশি আমাদের ক্ষুধা বাড়াতে সাহায্য করে। ভিটামিন সি জাতীয় খাবার হলো : কমলা, মাল্টা, স্ট্রবেরি, কাচা আম, পেঁপে, টমেটো বাধাকপি ইত্যাদি। এইগুলা ভিটামিন সি যুক্ত খাবার নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে ওজন বাড়াতে পারি।
- ভিটামিন এ : ভিটামিন এ হাড়ের গঠন বৃদ্ধির পাশাপাশি শরীরে সঠিক পুস্টি যোগান দেয়। এবং ক্ষুধা তৈরি করতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ যুক্ত খাবার গুলোর মধ্যে পড়ে গাজর, মিস্টিকুমড়া, ডিমের কুসুম এবং ছোট মাছ এই সকল খাবারে প্রচুর ভিটামিন এ পাওয়া যায়।ভিটামিন এ যুক্ত খাবার আমাদের খাবারের তালিকায় নিয়ম মাফিক রাখা উচিত এইসকল খাবার দেহের মাংস পেশি বাড়াতে সাহায্য করে।
মোটা না হওয়ার কারন কি
- মোটা না হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। আমরা অনেক সময় অনেক খাবার খেয়ে থাকি তবুও সহজে মোটা হতে পারিনা। আমরা অনেক সময় ভাবি ফাস্ট ফুড এবং মিস্টি জাতীয় খাবার বেশি করে খেলেই বুঝি মোটা হওয়া যায় বরং অনেক সময় এইগুলো খাবার আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতি করে। আমাদের সবসময় সুষম পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। শুধু পুস্টিকর খাবার খেলে হবে না আমাদের কোন খাবারে কি উপাদান রয়েছে সেইগুলা খেয়াল রাখতে হবে।
- আমাদের খাবারের তালিকায় যেসব খাবারে ক্যালরি,ও ফ্যাটের সংখ্যা কম থাকে কিন্তু ফাইবারের সংখ্যা বেশি থাকে এইসব আমাদের খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে।যেমনঃ পালংশাক, লেটুস ,ব্রেকলি ইত্যাদি এইগুলাতে ফাইবার এর পরিমান বেশি থাকে।বিভিন্ন ফল রয়েছে যেমনঃ আপেল, কমলা লেবু,তেতুল এইসব ফলে ক্যালরি ও ফ্যাটের সংখ্যা কম থাকে কিন্তু ফাইবার সংখ্যা বেশি থাকে এই সকল খাবার নিয়মিত খেলে সহজে মোটা হতে পারবোনা।
- মোটা না হওয়ার আরো একটি কারন হতে পারে পরি মান মতো না ঘুমানো শরির মোটা করতে চাইলে আমাদের স্বাভাবিক ভাবে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো উচিত।এবং অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে আপনি মোটা হতে পারবেন না।দিনে স্বাভাবিকের তুলনায় কম পানি খেলে আমাদের শরীর শুকায় যেতে থাকে।প্রতিদিন দিনে কমপক্ষে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত। আমাদের নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত।ব্যায়ামের মাধ্যমে মাংশ পেশি বাড়তে থাকে।
শেষকথা : রোগা থেকে মোটা হওয়ার উপায়
আশাকরি পুরো কন্টেন্টটি যদি আপনি পড়ে থাকেন তাহলে সহজে বুঝতে পারবেন কিভাবে রোগা থেকে মোটা হওয়া যায়। আপনারা যারা রোগা থেকে মোটা হতে চান তারা উপরের বিষয় গুলো ভালো করে ফলো করুন আপনাদের কোন মোটা হওয়ার ওষুধ খাওয়ার প্রয়জন হবে না স্বাভাবিক ভাবে স্বাস্থ্যবান হতে পারবেন। যদি অন্য হরমোনাল সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি একজন অভিজ্ঞ পুষ্টিবিদ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
সেভাঘর ডট কম ওয়েবসাইট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন '#'
comment url