মানসিক চাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখার উপায়

মানসিক চাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখার উপায় সম্পর্কে আজকের বিস্তারিত আলোচনা। মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে সকল সমস্যা বাধা এড়িয়ে নিজেকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রতিটি মানুষের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক।আমাদের শরীর ও মনের জন্য উভয় ক্ষতিকর।
 
মানসিক-চাপ-থেকে-নিজেকে-বিরত-রাখার-উপায়
 
বর্তমান সময়ে কর্মজীবনের ব্যস্ততায়, পারিবারিক সমস্যা এবং আর্থিক সমস্যা সহ নিত্যদিনের সাথে জড়িত বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আমরা মানসিক চিন্তায় ভুগে থাকি।  আমরা মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে সর্বপ্রথম সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস রাখা উচিত। পাশাপাশি আমাদের পরিবার-পরিজনকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়া উচিত এবং নিয়মিত ব্যায়াম ও হাসিখুশি জীবন যাপন করা উচিত

পোস্ট সুচিপত্রঃমানসিক চাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখার উপায়

মানসিক চাপ কি

মানসিক চাপ এমন একটি প্রক্রিয়া যখন আমরা আমাদের জীবনের বিশেষ কোন সমস্যার বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করি। তখন আমাদের মাথায় এক ধরনের মানসিকভাবে প্রেসার সৃষ্টি হয় যা সাধারণত মানসিক চাপ নামে পরিচিত। মানসিক চাপ বর্তমানে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িত হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাভাবিকভাবে মানসিক চাপ আমাদের  বিভিন্ন সমস্যার সমাধান বের করতে সাহায্য করে যা থেকে আমরা বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়ে থাকি।

কিন্তু  অনেক সময় আমরা যেকোনো বিষয় নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তাভাবনা করি যা থেকে আমাদের মাথায় অতিরিক্ত মানসিক চাপ সৃষ্টি করে যা আমাদের শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মানুষের জীবন মানে বিভিন্ন সমস্যা, চিন্তাভাবনা চারিদিক থেকে বিভিন্ন চাপ ইত্যাদি জীবনের সাথে জড়িত একটি বিষয়। অতিরিক্ত চাপ কমিয়ে আমাদের আল্লাহ তালার উপর ভরসা রেখে সামনের পথে এগিয়ে চলতে হবে নিশ্চয়ই সকল সমস্যার সমাধান হবে। 

মানসিক চাপের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি

  • মানসিক চাপের বৈশিষ্ট্য গুলো কি কি আপনার জানা অবশ্যই প্রয়োজন। মানুষের জীবন মাত্রই বিভিন্ন ধরনের সমস্যা এবং বিভিন্ন ধরনের চাপ তা হতে পারে শারীরিক অথবা মানসিক । কিন্তু প্রত্যেকটি বিষয়ে মানসিক চাপ যে আমাদের ক্ষতি করে শুধু তা নয় এই মানসিক চাপ আমাদের বিভিন্ন উপকারে আসে এবং সফলতা এনে দিতে সাহায্য করে। তবে কিছু অতিরিক্ত নেতিবাচক সমস্যা রয়েছে যা আমাদের মোকাবেলা করার চেষ্টা করতে হবে।
  • মানসিক চাপের ইতিবাচক বৈশিষ্ট্য: মানুষ যখন কোন বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করে তখন তার মধ্যে এক ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। এই মানসিক চাপ অনেক সময় আমাদের ইতিবাচক কারণ হয়ে দাঁড়ায় যা আমাদের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে সফলতা সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। যেমন আমরা বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে ইতিবাচক চিন্তা ভাবনা করি এবং পড়াশোনায় মনোযোগ সৃষ্টি করি সেক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ সে চিন্তা ভাবনা থেকে আমরা অবশ্যই ভালো ফলাফল পাবো।
  • মানসিক চাপের নেতিবাচক বৈশিষ্ট্য: মানসিক চাপ স্বাভাবিকভাবে ইতিবাচক হয়ে থাকে কিন্তু এটি অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে গেলে আমাদের জীবনে বিভিন্ন দিক দিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে। শরীরে দুর্বলতা সৃষ্টি করে এমনকি হৃদরোগের মতো সমস্যা হতে পারে এছাড়াও অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে গেলে অনেক সময় মানুষ ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে এবং বিশেষ সময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে এবং ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে ফেলে।

মানসিক চাপের বিভিন্ন লক্ষণ

  • মানসিক চাপের বিভিন্ন লক্ষণগুলো এক পর্যায়ে একটি মানুষের জীবনে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে শারীরিক ,মানসিক ও আচরণগত দিক দিয়ে লক্ষ্য পেতে থাকে। এই লক্ষণ গুলো অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে আমাদের শারীরিক মানসিক জীবনকে স্বাভাবিকভাবে ব্যাহত করে। ফলে আমাদের স্বাভাবিক জীবনে অস্বাভাবিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
  • শারীরিক লক্ষণ: মানসিক চাপ যখন স্বাভাবিক পর্যায়ে থেকে অস্বাভাবিক পর্যায়ে চলে যায় তখন আমাদের শরীরের মধ্যে কিছু শারীরিক লক্ষণ প্রকাশ পায় । বিভিন্নভাবে শারীরিক সমস্যা তৈরি করে যেমন হৃদ স্পন্দন বাড়িয়ে তোলে এক পর্যায়ে হার্টের সমস্যার মত বিরাট সমস্যা আকার ধারণ করে, এছাড়াও শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, পেটের সমস্যা এবং শরীরে ক্লান্তি সৃষ্টি করে।
  • মানসিক লক্ষণ: অনেক সময় মানসিক চাপ বিপরীত পর্যায়ে চলে গেলে মানুষের মনের মধ্যে বিভিন্ন রকম নেতিবাচক চিন্তাভাবনা সৃষ্টি হয়। এর ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের মানসিক সমস্যার উপসর্গ দেখা দিতে পারে যেমন মানসিক শান্তি নষ্ট করে ।এক সময় এই চাপ দীর্ঘস্থায়ী হলে মনোবল হারিয়ে ফেলি এবং মনোযোগের অভাবে বিভিন্ন বিষন্নতা ও হতাশা সৃষ্টি করে থাকে। বিভিন্ন পর্যায়ে মানুষ ভয় আতঙ্কে ভুগতে থাকে এমনকি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগে ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে।
  • আচরণগত লক্ষণ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ মানুষের শারীরিক এবং মানসিক দিক শুধু পরিবর্তন করে না অনেক সময় আচরণের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষণ করা যায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে যা কিছু সম্পৃক্ত যেমন: খাবারের মধ্যে, ঘুমের মধ্যে এবং দৈনন্দিন কাজে অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা যায়। এছাড়াও অনেকে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এমনকি আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে একা থাকতে থাকে যা সকল কিছু মানুষের জন্য ক্ষতিকর।

মানসিক চাপের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ

  1. সম্পর্কের সমস্যা: মানসিক চাপের অন্যতম একটি বিশেষ কারণ হতে পারে সম্পর্কের সমস্যা যা মানুষকে আবেগিক এবং মানসিক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে। পারিবারিক সম্পর্কে দন্দ হাঙ্গামা, প্রিয় মানুষের বিশ্বাসঘাতকতা, দাম্পত্য জীবনে একে অপরকে বোঝাপড়ার অভাবে অসুখী, এ সকল সমস্যা একসময় মানুষকে একাকিত্বের দিকে টেনে নিয়ে যায় যা এক সময় তীব্র মানসিক চাপ সৃষ্টি করে এবং বিভিন্নভাবে মানসিক স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
  2. অর্থনৈতিক চাপ: জীবন যাত্রার মান ঠিক রাখতে এবং পরিবারকে সুখী করতে সব ক্ষেত্রেই অর্থের প্রয়োজন। অর্থনৈতিক অভাব পড়লে মানুষ  চারিদিক দিয়ে মানসিক চাপের মধ্যে ভুগতে থাকে বিশেষ করে যখন পরিবারের চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয় এবং সঞ্চয় করার জন্য কোন জায়গায় সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে না । তখন মাথায় অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হয় এক সময় ব্যক্তি তার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলতে থাকে।
  3. কর্মক্ষেত্র চাপ: বর্তমানে কর্মক্ষেত্রে চাপ মানসিক চাপের একটি অন্যতম কারণ  হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে মানুষের সংখ্যা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের সংখ্যা অনেক কম । অনেকেই কর্মক্ষেত্র হারানোর ভয় ও আতঙ্ক বোধ নিয়ে কাজ করেন কারণ কোন ভুল ত্রুটির কারণে কর্মক্ষেত্র চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এটা এক ধরনের মানসিক চাপ সৃষ্টি করে।এছাড়াও,অতিরিক্ত কাজের চাপ, সহকর্মীদের সাথে তুলনামূলকভাবে প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন নিপীড়ন মানুষকে মানসিক চাপের দিকে ঠেলে দেয়। 
  4. স্বাস্থ্যগত সমস্যা: স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন রোগ যেমন : ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হৃদরোগ, প্যারালাইসিস ইত্যাদি বড় ধরনের রোগ আমাদের শরীরকে শুধু শারীরিক ভাবে অসুস্থ করে না পাশাপাশি মানসিক চাপে ভারসাম্যহীন করে তোলে। এছাড়াও অসুস্থ থাকার কারণে চিকিৎসার ভার বহন, অতি সহজে সুস্থ না হয়ে ওঠা বিশেষ করে অসুস্থ থাকাকালীন সময় যখন মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে করে এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর একটি বিরাট নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
  5. সামাজিক এবং পরিবেশগত চাপ:  সামাজিকভাবে এবং পরিবেশ গত দিক থেকে আমাদের জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলে যা থেকে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। যেমন সমাজে আর্থিক অবস্থানের ভিত্তিতে উঁচু-নিচু ভেদাভেদ সৃষ্টি করে যা মানুষের মনে হীনমন্যতা সৃষ্টি করে। এছাড়াও পরিবেশের অস্বস্তিকর অবস্থা অতিরিক্ত শব্দ ,ঘনবসতি এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবেলা করতে আমাদের প্রতিনিয়ত মানসিক চাপের মধ্যে ভুগতে হচ্ছে।

মানসিক চাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায়

মানসিক চাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় আপনাদের জন্য উল্লেখ করা হলো বিশেষ করে যারা মানসিক চাপে  ভুগছেন ।

  1. সময় ব্যবস্থাপনা: আপনার কর্মক্ষেত্রের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করুন  এবং সময়মতো আপনার দায়িত্বের প্রতিটি কাজ শেষ করার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন প্রত্যেকটি কাজের জন্য দিনের শুরুতে একটি রুটিন তৈরি করে নিন কখন কোন কাজ করবেন সেটা হতে পারে পারিবারিক অথবা  কর্মক্ষেত্রে। পাশাপাশি কাজগুলো ঠিকমতো করার চেষ্টা করুন দেখবেন কাজ গুলো অতি তাড়াতাড়ি সহজে শেষ করতে পারবেন এতে মানসিক চাপ কমে যাবে।
  2. ইতিবাচক মনোভাব: মানসিক চাপ কমাতে নিজের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করুন এটা আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করবে। যেকোনো চ্যালেঞ্জ কে ইতিবাচক হিসেবে নিন নিজেকে কখনো ছোট না মনে করে নিজের ভুলগুলো থেকে নিজেকে সংশোধন করার চেষ্টা করুন। এছাড়া ইতিবাচক চিন্তাভাবনা মানসিক স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এবং মনকে শান্ত রাখে মানসিক চাপ কমিয়ে সুস্থ জীবনযাপন নিশ্চিত করার চেষ্টা করুন।
  3. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমিয়ে নিন: যখন বিভিন্ন সময়ে মানসিক চাপে নিজেকে অস্বস্তি বোধ মনে করবেন এই সময় মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমিয়ে নিন ।এতে মাথার ব্রেনের উপর যে প্রেসার পড়ে তা অনেকটাই কমে যায় এবং মাথার মস্তিষ্ক পাতলা হয়। এবং বিভিন্ন ধরনের হরমোন সৃষ্টি হয় যে আপনার মাথার ব্রেন কে সতেজ রাখতে সাহায্য করে এবং বিভিন্ন মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে।
  4. নিজের জন্য সময় বের করুন: আমরা বিভিন্ন সময় কাজকর্ম করতে করতে একঘেয়েমি হয়ে পড়ি এবং বিভিন্ন সমস্যায় মানসিক চাপে ভুগতে থাকি। এ সকল সমস্যা এড়াতে নিজেকে সময় দিন আপনার পছন্দের গল্পের বই পড়ুন, সংগীত শুনুন বিভিন্ন ধরনের কৌতুক দেখেন সময় করে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন। মাঝেমধ্যে সময় করে ভ্রমন করুন প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যান যা আপনার মানসিক চাপ কমাতে অনেকটাই সাহায্য করবে।
  5. সামাজিক সম্পর্ক উন্নত করুন: মানসিক চাপ কমাতে সামাজিক সম্পর্ক উন্নত করুন। নিজের পরিবারের সাথে সময় ব্যয় করুন নিজের আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখুন। একাকীত্ব না থেকে সবার সাথে কথা বলুন ।যেকোনো ধরনের সমস্যায় আপন লোকজনদের সাথে শেয়ার করুন দেখবেন এক সময় নিজেকে অনেক হালকা মনে হবে এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুঁজে পাবেন এতে আপনি মানসিক চাপ থেকেও মুক্তি পাবেন এবং নিজেকে স্বাভাবিক মনে হবে।
  6. হাসিখুশি থাকার চেষ্টা করুন: বিভিন্ন সময়ে কাজকর্ম করতে করতে আমরা একঘেয়েমি হয়ে পড়ি এতে করে বিভিন্ন রকমের মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। মানসিক চাপ দূর করতে নিজেকে হাসি খুশি রাখুন পরিবার এবং বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন রকমের কৌতুক ধাঁধা খেলুন এছাড়াও হাসির নাটক ও ও কৌতুক দেখুন এবং মন খুলে হাসুন এবং গভীর নিঃশ্বাস নিন দেখবেন আস্তে আস্তে মানসিক চাপ কমে যাবে।
  7. বাজে নেশা ত্যাগ করুন: বিভিন্ন জরিপে দেখা যায় নেশাগ্রস্ত অধিকাংশ মানুষ মানসিক চাপে ভুগতে থাকে। বিভিন্ন বাজে নেশা মানুষকে সাময়িক কারণে শস্তি দিলেও পরবর্তীতে স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে এক পর্যায়ে বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকলাঙ্গ হতে পারে। বাজে নেশা মানুষের পারিবার সম্পর্ক নষ্ট করে দেয় মানুষের আচরণে বিভিন্ন ক্ষুব্ধ পরিবর্তন আনে। মানসিক চাপ কমাতে বাজে নেশা পরিহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ।
  8. বেকারত্ব দূর করুন: বেকারত্ব বর্তমানে মানসিক চাপের অন্যতম একটি কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বেকারত্ব মানুষকে সবার কাছে হীন করে বেকার মানুষকে সমাজে কেউ মূল্য দেয় না বেকারত্ব শুধু নিজের জন্য অভিশাপ নয় বরং এটি সমাজ এবং দেশের জন্য অভিশাপ বয়ে আনে। মানসিক চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে বেকারত্ব দূর করে যে কোন একটি কর্মক্ষেত্র নিজেকে জড়ালে মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

মানসিক চাপ কমাতে ইসলামিক উপায়

  • মানসিক চাপ কমাতে ইসলামিক উপায় গুলো বিশেষভাবে কার্যকরী ইসলামিক পন্থা গুলো শুধু আমাদের মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে না বরং আমাদের  আত্মা কে প্রশান্তময়ী করে। আল্লাহ তাআলার দিক নির্দেশনা পথে চললে আমরা অবশ্যই মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাবো। মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা নিয়মিত সালাত কায়েম করব কারণ সালাতের মাধ্যমে প্রতিটি বান্দা আল্লাহতালার অতি নিকটে সন্নিবেশ হতে পারে।
  •  
  • মানসিক-চাপ-কমাতে-ইসলামিক-উপায়
     
  • সালাতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া প্রার্থনা করব তিনি আমাদের সৃষ্টিকর্তা পরম দয়ালু নিশ্চয়ই সকল সমস্যা সমাধান করে আমাদের মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দেবে ইনশাআল্লাহ। এছাড়াও সকাল সন্ধ্যা কোরআন তেলাওয়াত করব এর মাধ্যমে আত্মা প্রশান্তি লাভ করে এবং এবং অধিক সওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়। মানসিক চাপ থেকে মুক্তি থাকতে সব সময় আমরা আল্লাহ তাআলার প্রশংসনীয় নামে সদা সর্বদা জিকিরে মগ্ন থাকবো।
  • যেকোনো কাজের সময় আমাদের মনে মনে জিকির করব যেমন সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ ,লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার ।এছাড়াও আরো জিকির রয়েছে যা আমাদের আত্মাকে শুদ্ধ কর মনকে শান্ত রাখে মানসিক চাপ কমাতে এটি একটি উত্তম পন্থা। আমরা গরিবদের মাঝে দান সাদকা করব এতে গরিবরা আমাদের জন্য দোয়া করবেন এবং আল্লাহতালা আমাদের প্রতি রহমত নাযিল করবেন । 
  • বিভিন্ন সময়ে শরীরের সাদকা হিসেবে নফল রোজা রাখব এতে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকা যায়। যেকোনো বিষয়ে সহজে হতাশা হব না আল্লাহ তায়ালার তকদিরের উপর ভরসা রাখবো। তিনি আমাদের বিভিন্ন সময়ে বিপদ আপদ দিয়ে পরীক্ষা করে থাকেন এবং তিনি উদ্ধার করেন। এজন্য যেকোন বিপদে মানসিক চাপে না ভেবে আল্লাহতালার দিকে মনোনিবেশ হব। তিনি আমাদের সকল সমস্যার সমাধান করে দেবেন এবং সকল মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দিবেন ইনশাআল্লাহ।

বয়সন্ধিকালে মানসিক চাপ কমানোর উপায়

  • আমাদের জীবনে বয়ঃসন্ধিকাল এমন একটি দুরন্ত পর্যায় এই সময় আমাদের জীবনে বিভিন্ন রকমের শারীরিক ও  মানসিক পরিবর্তন দেখা যায়। এ সময় বিভিন্ন ধরনের আবেগ চিন্তাভাবনা আমাদের ভেতরে কাজ করে।আমরা আমাদের পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে ওঠার চেষ্টা করি এসব চিন্তা ভাবনা কখনো কখনো মানসিক চাপে রূপ নিতে শুরু করে।বয়ঃসন্ধিকালে এই সকল চিন্তাভাবনা আসবে এটা স্বাভাবিক। 
  • তবে এটাকে আমরা কোন সময় নিজের মধ্যে রেখে মানসিক চাপ সৃষ্টি করব না বরং এতে আমাদের শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এসময় আমরা বিভিন্ন বিষয় এবং চিন্তাভাবনা নিয়ে আমরা আমাদের পরিবারের গুরুজনদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করব এছাড়াও বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পরামর্শ করব এবং তাদের থেকে বিভিন্ন সমস্যার পরামর্শ নেব এতে আমরা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে পারবো এবং মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পাবো। 
  • আমরা বিভিন্ন সমস্যার সমাধান নিতে আল্লাহ তাআলার কাছে নিজেকে মনোনিবেশ সালাত কায়েম এবং জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে সকল সমস্যা সমাধান চাইবো ইনশাআল্লাহ তিনি নিশ্চয়ই আমাদের সকল সমস্যার সমাধান বের করে দিবেন। মাঝেমধ্যে আমরা বিভিন্ন রকমের খেলাধুলা করব এতে আমাদের মন ও শরীর উভয় সুস্থ থাকবে এবং খেলাধুলা মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। 

মানসিক চাপ কমানোর ব্যায়াম

  • মানসিক চাপ কমানোর জন্য শারীরিক ব্যায়াম আমাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকরী। বিভিন্ন সময়ে অতিরিক্ত মানসিক চাপ আমাদের জন্য শরীর ও মনের জন্য হুমকি স্বরূপ এ সকল সমস্যা এড়াতে আমরা নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলবো। শরীরকে স্বাভাবিকভাবে শারীরিক এবং মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ রাখতে আমরা নিয়মিত সকল বিকাল দৌড়াতে পারি এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত একটি উপকারী ব্যায়াম।
  •  

  •  
  • নিয়মিত এই ব্যায়াম করলে আমাদের শরীর থেকে  এন্ডোরফিন নামক এক ধরনের বিশেষ হরমোন নিঃসৃত হয়।আমাদের মনকে ভালো রাখতে এই হরমোন সাহায্য করে পাশাপাশি আমাদের শরীরক সুস্থ রাখে।নিজেকে সুস্থ রাখতে এবং চাপমুক্ত রাখতে বিভিন্ন ধরনের যোগ ব্যায়াম এবং শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারি যা আমাদের শরীর এবং মস্তিষ্কের জন্য অনেক উপকারী। বিভিন্ন সময়ে দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে আস্তে আস্তে শ্বাস প্রশ্বাস ত্যাগ করলে মাথার মস্তিষ্ক পাতলা থাকে পাশাপাশি মন ফ্রেশ থাকে।
  • আমাদের মস্তিষ্ক এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাইক্লিং একটি উপযুক্ত ব্যায়াম এর মাধ্যমে মন হাসিখুশি এবং ফ্রেশ থাকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নড়াচড়ার প্রভাবে শরীর সুস্থ থাকে। আমরা নিজেকে সুস্থ রাখতে মাঝেমধ্যে সুইমিং করতে পারি এটি আমাদের পুরো শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি ব্যায়াম। এ ব্যায়ামের ফলে আমাদের পুরো শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং মাথার মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে এর ফলে আমরা বিভিন্ন মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে পারি।

শেষ কথা: মানসিক চাপ থেকে নিজেকে বিরত রাখার উপায়

মানসিক চাপ থেকে নিজেকে মুক্ত রাখার উপায় হিসেবে কিছু পন্থা অনুসরণ করতে পারি। প্রথমত মানসিকভাবে নেতিবাচক দিক পরিবর্তন করে ইতিবাচক ভাবনা-চিন্তার দিকে আমাদের ধাবিত হতে হবে। প্রতিটি কাজে আমাদের দায়িত্বশীলতা বাড়াতে হবে এবং নিষ্ঠার সাথে আমাদের সঠিক সময়ের কাজ সময়ের মধ্য করার চেষ্টা করতে হবে। কোন সমস্যায় পড়লে অবশ্যয় আপনার বড় এবং গুরুজন ব্যক্তি যিনি আপনার থেকে বেশি জ্ঞানী তাদের সাথে শেয়ার করুন আপনার সমস্যা গুলো।

আপনি আল্লাহতালার কাছে নামাজ পড়ে দোয়া করুন তিনি আপনাকে যেকোনো সমস্যার সমাধান তৈরি করে দিবেন এবং আপনাকে মানসিক চাপ থেকে মুক্ত করে দিবেন ইনশাআল্লাহ। মাঝে মধ্য মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে ভ্রমন করুন, নিজের সাথে সময় ব্যায় করুন এবং হাসি খুশি থাকার উপর চেষ্টা করুন।যেকোন কাজে আতঙ্ক না হয়ে এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি না করে তকদীরে বিশ্বাস রেখে ধৈর্য সহকারে সমাধান করার চেষ্টা করুন।











 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সেভাঘর ডট কম ওয়েবসাইট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন '#'

comment url