মাথার উকুন দূর করার সহজ ও কার্যকারী উপায়

মাথার উকুন দূর করার সহজ ও কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আজকে আপনাদের সাথে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব। আমরা মাথায় উকুন নিয়ে প্রতিনিয়ত অতিষ্ঠ যন্ত্রণা ভোগ করছি। এই উকুন শুধু আমাদের যন্ত্রণায় দেয় না প্রতিনিয়ত আমাদের মাথা থেকে মাথা রক্ত ও চুলের পুষ্টি চুষে খেয়ে ফেলে।  


এই  যন্ত্রনাদায়ক উকুন থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমার প্রতিনিয়ত বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করি। আপনারা যারা উকুনের অতিষ্ট যন্ত্রণা ভোগ করছেন আজকে তাদের জন্য আমাদের এই আর্টিকেল। আশা করি এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা ভালো ফলাফল পাবেন। 

পোস্ট সুচিপত্রঃমাথার উকুন দূর করার সহজ ও কার্যকারী উপায়

মাথার উকুন দূর করার সহজ ও কার্যকারী উপায়

  • মাথার উকুন দূর করার সহজ ও কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব । মাথায় উকুন নেই এরকম মানুষের সংখ্যা খুবই কম উকুন সেই প্রাচীন আমল কাল থেকে মানুষের মাথায় বিস্তার করে আসছে। এই ক্ষুদ্র উকুন নামক পোকাটি সাধারণত মানুষের মাথায় পরজীবী হয়ে বসবাস করে এবং এর খাদ্য মানুষের মাথার রক্ত এবং অন্যান্য পুষ্টি থেকে সংগ্রহ করে থাকে। উকুন থেকে নিজেকে মুক্ত করা একটি চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়ায় ।
  • তবে কিছু নিয়মাবলী অনুসরণ করলে এই উকুন নামক পোকা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব । উকুন সাধারণত মাথার চুল অপরিষ্কার এবং ভেজা চুল বেঁধে রাখলে সৃষ্টি হয়। এইজন্য উকুন থেকে মুক্তি পেতে আমাদের চুল নিয়মিত শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। ভেজা চুল কখনো বেঁধে রাখা যাবে না চুল গুলো সুন্দর করে শুকিয়ে নিয়ে তারপর বেঁধে রাখতে হবে।চুলে নিয়মিত তেল দিতে হবে এবং ঘন ঘন চিকন পাশের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়াতে হবে তাহলে উকুন চলে যাবে।
  • মাথায় উকুন রয়েছে এমন ব্যক্তির কাছ থেকে এড়িয়ে চলা ভালো বিশেষ করে একসাথে কখনো শোয়া যাবেনা। উকুন ভালো করতে প্রাচীনকাল থেকে বিভিন্ন প্রাকৃতিক এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।আপনি চাইলে প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে পান পাতা বেটে মাথায় ব্যবহার করতে পারেন কারণ পান পাতার মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিপারাসাইটিক নামক এক ধরনের বিশেষ উপাদান যা আপনার মাথার উকুন সহজ ও কার্যকরীভাবে ধ্বংস করতে সাহায্য করবে।
  • পাশাপাশি আপনি মেহগনির ফল একই প্রক্রিয়ায় ব্যবহার করতে পারেন এটা অনেক তিতো হওয়াতে আপনার উকুন গুলো তাড়াতাড়ি পালিয়ে যাবে এবং অনেক কার্যকরী হবে। এগুলো প্রতিটি উপাদান প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি যা আপনার মাথার ত্বক ও চুল নিরাপদ রাখবে। তবে মাথার স্কিনে কোন সমস্যা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ব্যবহার করবেন। নিয়মিত চুলের যত্ন নিন উকুন ভালো করুন এবং উকুন থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন।

উকুন দূর করতে কার্যকরী লোশন

উকুন দূর করতে কার্যকরী লোশন সম্পর্কে জানতে পারবেন যা পুরোপুরি ডাক্তার দ্বারা প্রমাণিত কয়েকটি কার্যকরী লোশন। প্রতিনিয়ত উকুনের কামড়ের যন্ত্রণা ভোগ করছি এই যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে আমরা পরীক্ষিত  উকুন নাশক লোশনগুলো মাথায় ব্যবহার করতে পারি। এই লোশন গুলো ব্যবহারের ফলে কোন সমস্যা হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন।নিচে কয়েকটি  উকুন নাশক লোশনের তালিকা দেয়া হলো।
  1. এলাইস লোশন : এলাইস লোশন ব্যবহারের পূর্বে মাথা ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। পরবর্তীতে লোশন টি মাথার স্কাল্পে পুরোপুরি দিয়ে নিতে হবে। এটি মাথায় ১০ মিনিটের জন্য রাখার পরে পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই শ্যাম্পু টি মাথার উকুন সহ উকুনের ডিম নষ্ট করতে সাহায্য করে। মাথায় কোন এলার্জি জাতীয় সমস্যা থাকলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে লোশন টি ব্যবহার করবেন।
  2. নিক্স লোশন : উকুন ধ্বংস করতে নিক্স উকুন নাশক লোশন একটি পরীক্ষিত লোশন। লোশনটি ব্যবহার করার পূর্বে অবশ্যই মাথা পরিষ্কার থাকতে হবে। পরিষ্কার মাথায় আপনি ভেজা অথবা শুকনো চুলে যেকান যে কোন অবস্থায় এই লোশনটি মাথার স্কাল্পে ও চুলে ব্যবহার করতে পারেন। একবার ব্যবহারে ফলে আপনি বুঝতে পারবেন আপনার উকুন অধিকাংশ কমে গেছে ।দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করলে আপনি সম্পূর্ণ ভাবে উকুন নিরাময় করতে সক্ষম হবেন ইনশাল্লাহ।
  3. স্ক্যাবোমা লোশন : এই লোশন ব্যাবহারের ফলে মাথার স্কাল্পের উকুন দূর করার সাথে মাথার চুলে লেগে থাকা উকুনের ডিম গুলো দূর করতে সাহায্যে করে। এই শ্যাম্পু ব্যাবহারের পূর্বে মাথা পরিস্কার করে নিতে হবে তার পরে মাথার স্কাল্প এবং চুলে ভালো করে লাগিয়ে ১৫ মিনিটের মতো রেখে তারপর ধুয়ে ফেলব । এক সপ্তাহ পরপর দুই থেকে তিন বার ব্যাবহার করলে  ইনশাআল্লাহ মুক্তি পাবেন
  4. পারমেথ্রিক লোশন: এটি একটি কার্যকারী লোশন মাথার উকুন এবং উকুনের ডিম দুর করতে বেশ কার্যকর। আপনি পরিস্কার মাথায় চুল ভেজা অবস্থায় মাথার স্কালপে এই লোশনের ব্যাবহার উপযোগী এবং চুলে উকুনের নিক বা ডিম নিরাময় করতে চুলেও ব্যবহার করুন ১৫ মিনিটের জন্য। এভাবে প্রতি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন কয়েক দিনের মধ্যে আটামেটিক সকল উকুন নিরাময় হয়ে যাবে।

উকুন দূর করতে কার্যকারী ডাক্তারি শ্যাম্পু 

উকুন দূর করতে কার্যকারী ডাক্তারি শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন এই শ্যাম্পু গুলো আপনার উকুন ধ্বংস করতে অনেক কার্যকরী হবে। এই শ্যাম্পু গুলো সাধারণত রাসায়নিক উপাদান দিয়ে বিশেষ প্রক্রিয়ার  মাধ্যমে খুব সুন্দর ভাবে তৈরি করা হয় যা আপনার মাথার পরজীবী উকুন গুলোকে ধ্বংস করতে সাহায্য করে। নিচে কয়েকটি কার্যকারী ডাক্তারি শ্যাম্পুর তালিকা দেয়া হলো তবে ব্যবহারে পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।
  1. পারমেথ্রিন শ্যাম্পু : পারমেথ্রিন শ্যাম্পু বিশেষ রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি এক ধরনের উকুন নাশক শ্যাম্পু। মাথার উকুন দূর করতে চাইলে ডাক্তারে পরামর্শ অনুযায়ী এই শ্যাম্পুটি আপনি ব্যবহার করতে পারেন। এই শ্যাম্পু ব্যবহার করার পূর্বে মাথা ভালো ভাবে পরিষ্কার করে ভিজিয়ে নিতে হবে । শ্যাম্পু টি ভালোভাবে মেসেজ করে ৮ থেকে ১০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে হবে। উকুন ভালো না হওয়া পর্যন্ত পুনরায় এক সপ্তাহ পরে পরে কয়েকবার ব্যবহার করতে হবে।
  2. মেলাথিয়াম শ্যাম্পু : এই রাসায়নিক শ্যাম্পুটি ও  উকুন দূর করতে অনেক কার্যকারিতা প্রদান করে । এ শ্যাম্পু শুকনো চুলে ব্যবহার করতে হয় এবং ব্যবহার করার ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে । এটা উকুন এবং উকুনের ডিম উভয় ধ্বংস করে থাকে। উকুন নাশক শ্যাম্পুটি উকুন না ভালো হওয়া পর্যন্ত এক সপ্তাহ পরপর ব্যবহার করুন আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন। 
  3. বেন্জাইল অ্যালকোহল শ্যাম্পু: এই শ্যাম্পুতে রাসায়নিক কোন কেমিক্যাল না থাকায় আপনার মাথার ত্বকের জন্য এই শ্যাম্পুটি অনেক ভালো বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য অনেক উপযোগী একটি শ্যাম্পু । মাথার উকুন দূর করতে এই শ্যাম্পু পরিষ্কার চুলে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে। সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করবেন আশা করা যায় কয়েকবার ব্যবহার করলে আপনি হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
  4. লিনডিন শ্যাম্পু: এই শ্যাম্পুটি  শক্তিশালী এবং কার্যকরী একটি শ্যাম্পু। পুরো মাথা ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে শ্যাম্পুটি ব্যবহারের ৫ থেকে ৬ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে হবে। শ্যাম্পু এক সপ্তাহ পর পর ব্যবহার করা উচিত তবে এই শ্যাম্পুটি ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করলে কার্যকরী ফলাফল পাওয়া যায়। তবে রাসায়নিক কেমিক্যাল বেশি থাকায় শিশুদের ত্বকে ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন।
  5. ইভারমেকটিন মেশিন শ্যাম্পু: এই  শ্যাম্পুটি একটি পরীক্ষিত শ্যাম্পু । একবার ব্যবহার করলে মাথার সম্পূর্ণ উকুন এবং উকুনের ডিম নিরাময় হয়ে যায়। মাথার ত্বক পরিষ্কার করে শ্যাম্পুটি একবার ব্যবহার করুন এবং ৮ থেকে ১০ মিনিটের জন্য রেখে ধুয়ে ফেলুন নিজে ফলাফল বুঝতে পারবেন। শ্যাম্পুটি ব্যবহারের পরে আপনি উকুনের অসহ্য যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন ইনশাআল্লাহ।

রসুন দিয়ে উকুন দূর করার উপায়

  • রসুন দিয়ে উকুন দূর করার উপায় হলো একটি কার্যকরী পদ্ধতি যা পুরোটাই প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি। আমরা উকুন দূর করতে প্রাকৃতিক উপাদান রসুন এর পেস্ট বানিয়ে মাথায় ব্যবহার করতে পারি। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি হওয়ায় এর কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। রসুনের মধ্য বিদ্যমান রয়েছে সালফার নামক এক উপাদান। এটি মাথায় দেয়ার পরে এমন এক ধরনের তীব্র গন্ধযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে যা উকুনের জন্য বিপরীত ক্রিয়া সৃষ্টি করে।
  • মাথার উকুন দূর করতে আমরা রসুনের সাথে আরেকটি প্রাকৃতিক উপাদান লেবু যোগ করে একটি প্রাকৃতিক মিশ্রণ তৈরি করে নেব। প্রাকৃতিক মিশ্রণটি তৈরি করতে প্রথমে ১০ থেকে ১২ টি রসুনের কোয়া পরিষ্কারভাবে ছাড়িয়ে নেব তারপরে পেস্ট করে নেব। পরবর্তীতে একটি লেবু থেকে ২ টেবিল চামচ লেবুর রস নিয়ে নেব এবং ভালোভাবে দুইটি উপাদান মিক্স করে নেব ‌। মিশ্রণটি মাথায় দেয়ার পূর্বে পুরো মাথা ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। 
  • পরিষ্কার মাথার পুরো স্কাল্পে এই মিশ্রণটি ভালোভাবে দিয়ে দিতে হবে।পুরো মাথাটি ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন এর জন্য একটি শাওয়ার ক্যাপ ব্যবহার করুন। এটি ৪০থেকে ৫০মিনিটের জন্য রেখে দিন পরবর্তীতে শ্যাম্পু করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এই পদ্ধতি অনুসারে রসুনের মিশ্রণটি সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার প্রয়োগ করলে উকুন ধীরে ধীরে কমে যাবে। । চুল সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবেন এবং কখনোই ভেজা চুল বেঁধে রাখবেন না।

ন্যাপথলিন দিয়ে উকুন দূর করার উপায় 

  • ন্যাপথলিন দিয়ে উকুন দূর করার উপায় হল একটি প্রচলিত উপায়। ন্যাপথলিন দিয়ে উকুন দূর করার পদ্ধতিটি অনুসরণ করার আগে আমাদের অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত কারণ ন্যাপথলিন রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরি। ন্যাপথলিন এর মধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী রাসায়নিক গন্ধযুক্ত উপাদান উকুনের জন্য একটি বিপরীত ক্রিয়া সৃষ্টি করে । এটি উকুনের জন্য এতটাই অসহনীয় হয়ে থাকে যে উকুন এই রাসায়নিক গন্ধ গ্রহণ করার সাথে সাথে মারা যেতে বাধ্য হয়।
  • এই পদ্ধতিটি প্রয়োগ করতে দুই থেকে তিনটি ন্যাপথলিন বল একটি পরিষ্কার কাপড় অথবা টিস্যুতে পেঁচিয়ে মাথার চুলের মধ্যে দিয়ে রাখুন। একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে পুরো মাথা সারা রাত ধরে জড়িয়ে রাখুন। এটি উকুন দূর করতে অনেক কার্যকরী কিন্তু এর কিছু বিপরীত ফলাফল রয়েছে এক্ষেত্রে  সতর্কতা অবলম্বন করে ব্যবহার করতে হবে। ন্যাপথলিনের রাসায়নিক দুর্গন্ধ শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে বেশিক্ষণ চলাচল করলে আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ক্ষতি হতে পারে।
  • বিশেষ করে ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে তারা যেন এই নিঃশ্বাস থেকে দূরে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এটি ব্যবহারের পর বদ্ধ ঘরে থাকা যাবে না সব সময় বাতাস আদান প্রদান করতে পারে এরকম জায়গায় থাকতে হবে । এতে দূষিত বাতাস গুলো বাহিরে চলে যাবে নিঃশ্বাসের কম ক্ষতি হবে। প্রেগন্যান্ট মহিলাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যভার করা উচিত। উকুন দূর করতে মাথা সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে।

ভিনেগার দিয়ে উকুন দূর করার উপায় 

  • ভিনেগার দিয়ে উকুন দূর করার উপায় হিসেবে এটি একটি সহজ পদ্ধতি এবং এটি উকুন দূর করতে অনেক কার্যকরী ফলাফল দেয়। ভিনেগারের মধ্য উপস্থিত রয়েছে অ্যাসিটিক অ্যাসিড যা শুধু প্রাপ্তবয়স্ক উকুনের উপর না বরং উকুনের ডিম গুলোর উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে এবং দ্রুত উকুন ধ্বংস করতে সাহায্য করে। আমরা এটি তৈরি করতে সমপরিমাণ সাদা ভিনেগারের সাথে সমপরিমাণ পানি মিশ্রিত করে নেব।
  • পরিষ্কার শুকনো মাথায় পুরো চুলের মধ্যে এটি ভালো ভাবে স্প্রে করে নেব এবং মাথার স্কাল্পে ভালোভাবে ঘষে ঘষে মেসেজ করে নেব। একটি শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে ৪০ থেকে ৪৫ মিনিটের জন্য রেখে দিব যাতে এর প্রতিক্রিয়া উকুনের উপর ভালোভাবে প্রভাব ফেলে। এরপরে একটি চিকন পাশের চিরুনি দিয়ে ভালোভাবে চুল আচঁড়িয়ে নেব এতে উকুন এবং উকুনের ডিম গুলো সব নিচে পড়ে যাবে। ভিনেগারের মধ্যে যেহেতু অ্যাসিটিক অ্যাসিড রয়েছে তাই আমরা এটি  মাথায় বেশিক্ষণ রাখবো না
  • পরবর্তীতে শ্যাম্পু করে ভালোভাবে চুলগুলো ধুয়ে শুকিয়ে নেব। এইভাবে সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার এ পদ্ধতি অবলম্বন করলে আশা করি আস্তে আস্তে উকুন গুলো ভালো হয়ে যাবে। যেহেতু ভিনেগার এ এসিড রয়েছে এক্ষেত্রে মাথার স্কিনে কোন সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ব্যবহার করা উচিত।পরিষ্কার থাকার পাশাপাশি সব সময় মাথায় উকুন রয়েছে এমন ব্যক্তির থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন এবং নিজেকে উকুন মুক্ত রাখুন।

কর্পূর দিয়ে উকুন দূর করার উপায়

  • কর্পূর দিয়ে উকুন দূর করার জন্য একটি দারুন ও সহজ উপায় । কর্পূর এর মধ্য বিদ্যামান ক্যামফোর নামক এক ধরনের প্রাকৃতিক যৌগ রয়েছে যা জীবাণু ধ্বংস করতে সাহায্য করে এবং এর মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে একটি শক্তিশালী দুর্গন্ধ যা উকুনকে ধ্বংস করে এবং সাথে উকুনের ডিম গুলোকে নষ্ট করে দেয়। কর্পূর আমরা কয়েকটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মাথায় ব্যবহার করতে পারি। প্রথমত আমরা শ্যামপুর সাথে কর্পূর মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নইব 
  • মিশ্রণটি মাথায় ৩০ মিনিটের মত রেখে তারপরে ধুয়ে ফেলতে হবে। দ্বিতীয় পদ্ধতি অনুসারে আমরা এটি নারিকেল তেলের সাথে এক চিমটি কর্পূর মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে ভালোভাবে মাথায় ম্যাসাজ করে ত্রিশ মিনিটের মতো রেখে তারপরে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলতে হবে। এছাড়াও ভিনেগারের সাথে এক চিমটি কর্পূর মিশিয়ে মাথায় স্কিনে ব্যবহার করতে পারি এবং এটিও ৩০ মিনিট পরে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে।
  • একটি স্প্রে বোতলে পানির সাথে কর্পূর মিশিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে শুকনো চুলে স্প্রে করে নিতে পারি উকুন দূর করতে এটি একটি প্রাকৃতিক ও কার্যকরী উপাদান। ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যাদের মাথায় এলার্জি এবং প্রদাহ জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের বেশি ব্যবহার করা যাবে না । ব্যবহারে পূর্বে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত।

উকুন দূর করার তেল 

  • মাথার উকুন দূর করার জন্য বাজারে কিছু কার্যকারী তেল পাওয়া যায় যা ব্যবহারের জন্য ডাক্তার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। আপনি আপনার মাথার উকুন দূর করতে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই তেল গুলো ব্যবহার করতে পারেন। এই তেল গুলো মাথার উকুন দূর করতে অনেক কার্যকরী ফলাফল দেয় নিচে কয়েকটি কার্যকারী তেলের তালিকা দেয়া হলো।
  •  

  •  
  • ট্রি টি অয়েল : এই তেলটি প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল ,আন্টি ফাংগাল এবং অ্যান্টি সেপটিক গুণাবলী সম্পন্ন। এই তেলটি চুলের বিভিন্ন সমস্যা দূর করে এবং চুলের উকুন ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এই তেলটি আপনি প্যাকেটের গায়ে লিখিত নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন। তেলটি আপনি মাথায় ৩০ মিনিটের মত রেখে তারপরে হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে চুলটি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ।এইভাবে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন দেখবেন ইনশাআল্লাহ।
  • নাইট্রোসাইক্লিক অয়েল: এই তেলের প্রাকৃতিক প্রধান উপাদান নিম যা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল সমৃদ্ধ। প্যাকেটের গায়ে লিখিত নির্দেশনা অনুযায়ী নিয়মিত সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে আপনি উকুনের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবেন। তেলটি ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই মাথা পরিষ্কার করে নেবেন এবং ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলবেন । কয়েকবার ব্যবহার করলে আশা করি ইনশাআল্লাহ উকুন থেকে মুক্তি পাবেন।

শেষ কথা: মাথার উকুন দূর করার সহজ কার্যকর উপায় 

মাথার উকুন দূর করার সহজ ও কার্যকরী উপায় সম্পর্কে আশা করি আপনারা ভালভাবে জেনেছেন। মাথায় উকুন নেই এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম বিশেষ করে মেয়েদের মাথায় উকুন বেশি হয়ে থাকে । এই উকুন প্রতিনিয়ত আমাদের মাথার রক্ত চুষে খেয়ে বেঁচে থাকে। উকুন আমাদের মানবদেহের জন্য অনেক ক্ষতিকর। উকুন থেকে বাঁচার জন্য আমরা নিয়মিত আমাদের মাথা পরিষ্কার করে রাখবো।

ঘনঘন চুল আঁচড়াতে হবে ভেজা চুল বেঁধে রাখা যাবে না। যাদের মাথায় উকুন আছে তাদের সাথে এক বিছানায় ঘুমানো যাবে না আলাদা আলাদা থাকার চেষ্টা করতে হবে কারণ এটি একজনের মাথা থেকে আরেকজনের মাথায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আমাদের সতর্কতা অবলম্বন  করে চলতে হবে তাহলে উকুনের যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হতে পারে।



















এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

সেভাঘর ডট কম ওয়েবসাইট এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন '#'

comment url